বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন কোভিডের সব রোগী

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত রোগীরা। এই উপজেলায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হওয়া রোগীরা কেউই হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নেননি। স্বাস্থ্যকর্মীরা নিয়মিত রোগীর অবস্থান পর্যবেক্ষণ করেন।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্যমতে, গত ৩১ মার্চ প্রথম নমুনা সংগ্রহ শুরু হয় শ্রীমঙ্গল উপজেলায়। ২৪ এপ্রিল প্রথম কোভিড রোগী শনাক্ত হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত মোট রোগীর সংখ্যা ৬৭। এর মধ্যে পুরোপুরি সুস্থ হয়েছেন ৫১ জন। তিনজন মারা গেছেন। তাঁদের একজন শনাক্ত হওয়ার পর ও বাকি দুজন উপসর্গ নিয়ে মারা যান। পরে তাঁদের নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন পজিটিভ আসে। এখন ১৩ জন করোনায় আক্রান্ত রোগী বাড়িতে বিচ্ছিন্ন থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাঁদের শারীরিক অবস্থা বেশ ভালো।

উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের নাহারপুর দিঘিরপাড় এলাকার করোনাজয়ী ওসমান মিয়া জানান, তিনি করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার পর কয়েক দিন শরীরে জ্বর ছিল। এ সময় হাসপাতালের ডাক্তারেরা তাঁকে জ্বর কমার জন্য নাপাসহ কয়েকটি ওষুধ খাওয়ার কথা বলেছিলেন। তিনি বাড়িতে আইসোলেশনে থেকে এসব ওষুধ খেয়েছেন। তা ছাড়া গরম পানি ভাপ নিয়েছেন। তিনি আরও জানান, কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর তিনি প্রতিদিন আদা চা এবং গরম পানি পান করেছেন। ফলমূল খেয়েছেন। প্রতিদিন গরম পানি দিয়ে অন্তত পাঁচবার গড়গড়া করতেন। হাসপাতালের ডাক্তাররা নিয়মিত তাঁর খোঁজখবর নিয়েছেন।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবং উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সদস্যসচিব সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী জানান, শ্রীমঙ্গলে যাঁরা কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁরা তাঁদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে ‘হোম আইসোলেশনে’ থাকার নির্দেশনা দিচ্ছেন। স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রতিদিন কোভিড রোগীদের খোঁজখবর নিচ্ছেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মাঠকর্মীরা বাড়িতে গিয়ে রোগীর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম জানান, তাঁদের কাছে যখন কারও কোভিড শনাক্ত হওয়ার তথ্য আসে, তাঁরা তাৎক্ষণিক আক্রান্ত রোগীর বাড়িতে যান। প্রত্যেক রোগীর বাড়িতে গিয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তারা তা লকডাউন করে আসেন। এ সময় প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকায় রোগীরা কিছুটা ভরসা পান। রোগী বাড়িতে আইসোলেশনে থাকলেও হাসপাতালের চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে থাকেন। রোগীর ওষুধ, খাদ্য ইত্যাদি পৌঁছে দেওয়া হয়। রোগী ও রোগীর পরিবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কারণে এখানে মৃত্যুর হার কম।