বিআরটিসি বাস চলাচলে বাধা, ভাঙচুর

সিলেট-শ্রীমঙ্গল ও হবিগঞ্জ সড়কে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) বাস চলাচলে বাধা দিয়েছেন পরিবহনশ্রমিকেরা। এ সময় বিআরটিসির কর্মচারী, সহকারীদের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের বাগবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিআরটিসি সিলেটের ডিপো ব্যবস্থাপকের ব্যবহৃত সরকারি গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটায়।

আজ রোববার সকাল নয়টার দিকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল কমদতলী হুমায়ূন রশীদ চত্বর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

বিআরটিসি সূত্রে জানা গেছে, সিলেট-শ্রীমঙ্গল ও সিলেট-হবিগঞ্জ সড়কে বিআরটিসির শীতাতপনিয়ন্ত্রিত বাস চালুর ঘোষণা দেয় বিআরটিসি। ২২ ডিসেম্বর সিলেট বিআরটিসির ডিপোতে সিলেট-শ্রীমঙ্গল ও সিলেট-হবিগঞ্জ সড়কে চলাচলের জন্য ১২টি বাস উদ্বোধন করা হয়। তবে সে সময় পরিবহন ধর্মঘট চলায় যাত্রী পরিবহন শুরু করা হয়নি। আজ থেকে এই দুই সড়কে বাস চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে নির্ধারিত দিন সকাল নয়টায় শ্রীমঙ্গল রুটে বাস চালু করতে গেলে পরিবহনশ্রমিকেরা বাধা দেন। এ সময় একটি বাস ছেড়ে গেলেও অপরটি ছাড়ার পূর্বেই অর্ধশতাধিক পরিবহনশ্রমিক বিআরটিসির কাউন্টারে হামলা চালান। হামলায় সিলেট বিআরটিসির ডিপো ব্যবস্থাপকের ব্যবহৃত জিপের পেছনের গ্লাস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ সময় বিআরটিসির কয়েকজন কর্মচারী মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন। পরে পুলিশ প্রশাসনের লোকজন গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

পরিবহনশ্রমিকদের দাবি, সিলেট-শ্রীমঙ্গল ও হবিগঞ্জ রুটে পর্যাপ্ত বাস থাকা সত্ত্বেও বিআরটিসি নতুন করে বাস সার্ভিস চালু করছে। বিষয়টি পরিবহনশ্রমিক বা মালিক সংগঠনের কাউকেই অবহিত বা আলোচনা করেনি। বিআরটিসি ইচ্ছে করলেই যেকোনো সড়কে বাস সার্ভিস শুরু করতে পারে না।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. জিয়াউল কবীর বলেন, ‘বিআরটিসি বাস চালু করুক, সেটিতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। তবে এ সড়কে পর্যাপ্ত পরিবহন রয়েছে। তারা কয়টি বাস সড়কে নামাচ্ছে কখন চলবে; সেগুলোর বিষয়ে আমাদের মালিক সমিতি বা পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের কাউকে অবহিত করেনি। বিষয়টি আমাদের আগে জানালে ভালো হতো। আমাদের না জানিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে।’ ভাঙচুর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো যানবাহন ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি। আমরা বিষয়টি সমাধানের জন্য বৈঠক করছি।’

বিআরটিসির সিলেটের ডিপো ব্যবস্থাপক জুলফিকার আলী বলেন, ‘এই দুই রুটে যাত্রীদের ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। প্রাথমিকভাবে দুটি বাস চালচল শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু রোববার একটি চালু করতে গিয়ে বাধা এবং হামলার সম্মুখীন হয়েছি। এতে আমার ব্যবহৃত একটি সরকারি গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখন পরিবহন মালিক সমিতির নেতা ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করা হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন বলেন, ‘হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিআরটিসির বাস চলাচলে বাধা দেওয়া শ্রমিকেরা একটি গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা ঘটনাস্থলে রয়েছি। এ ব্যাপারে অভিযোগ দেওয়া হলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’