বিউটি পারলারের কর্মীদের দুর্দিন

সখীপুরের বিউটি পারলারের কর্মীদের মধ্যে অনেকেই পেশা বদলানোর চিন্তাভাবনা করছেন।

করোনাকালে নেই কোনো জমকালো অনুষ্ঠান। তাই দুর্দিন চলছে সখীপুরের বিউটি পারলারগুলোর
ছবি: সংগৃহীত

করোনাকালে নেই বিয়ের ধুমধাম আয়োজন। গণজমায়েত করে জন্মদিন বা কোনো জমকালো অনুষ্ঠানও হচ্ছে না। নেই সাজবিলাসী নারীদের আনাগোনা। তাই দুর্দিন চলছে টাঙ্গাইলের সখীপুরের বিউটি পারলারের কর্মীদের। তাঁদের পরিবার-পরিজন নিয়ে অসহায় জীবন যাপন করতে হচ্ছে। অনেকেই পেশা বদলানোর চিন্তাভাবনা করছেন।

সখীপুর পৌরশহরেই আছে ৩০-৩২টি বিউটি পারলার। কেউ নিজের ঘরে আবার কেউ ঘর ভাড়া নিয়ে এসব প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন। এসব প্রতিষ্ঠানে শতাধিক নারী কর্মী কাজ করেন। করোনাকালে বিউটি পারলার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নারীর সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলার এসব নারী কর্মী বেকার হয়ে পড়েছেন। তাই এ সময় তাঁদের রোজগার বন্ধ হওয়ায় তাঁরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

উপজেলার নাবা বিউটি স্পার পরিচালক শিরীন সুলতানা বলেন, বিভিন্ন কাজের জন্য প্রতিদিন ভিড় লেগে থাকত। পারলারের কাজের পাশাপাশি অনুষ্ঠান বাড়িতে বিশেষ করে কনে সাজানো ও অন্যদের সাজিয়ে ভালো রোজগার হতো। অনেক মেয়ে কাজের প্রশিক্ষণও নিতেন। লকডাউনের শুরু থেকে সব কাজই বন্ধ। ফলে সবাই রোজগার হারিয়ে বাড়িতেই বসে আছেন। সরকারি কোনো সাহায্যও মিলছে না। শিরীন বলেন, ‘পারলারে আমি ছাড়াও আরও চারজন কর্মী কাজ করেন। এখানকার আয়ে সবার সংসার চলে। পারলার বন্ধ থাকলেও খরচ বন্ধ হয়নি। প্রতি মাসে ঘরভাড়া, বিদ্যুৎ বিল ঠিকই পরিশোধ করতে হয়।’

পারলারের কর্মী বিউটিশিয়ান পামেলা দ্রং ও ববিতা নড়রেক বলেন, লকডাউনে পারলার বন্ধ। বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে হয়। মালিকেরা এখন বেতন দিচ্ছেন না। ফলে জমানো টাকাও ফুরিয়ে গেছে। ধারকর্জ করে সংসার চলছে। তাঁরা অন্য পেশায় যাওয়ার চিন্তা করছেন।।

সখীপুর পাইলট মার্কেটের ছোঁয়া বিউটি পারলারের পরিচালক রওশন আরা বলেন, ‘ব্যবসা নেই, তারপরও ঘরভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল ঠিকই দিতে হচ্ছে। এ সময় সরকারি সুযোগ-সুবিধা না পেলে ব্যবসা গুটিয়ে পথে বসতে হবে। তা ছাড়া আমাদের কোনো সংগঠন নেই। ফলে আমাদের কথা কাউকে জানাতেও পারছি না।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চিত্রা শিকারী প্রথম আলোকে বলেন, সরকারি বরাদ্দ না থাকায় এঁদের জন্য কোনো সাহায্য সহযোগিতাও করা যাচ্ছে না। তবে সুযোগ পেলে পারলারের কর্মীদের বিষয়ে সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হবে।