টাঙ্গাইল-৭ আসনে উপনির্বাচন
বিএনপির ভোটে জয়ের আশা জাতীয় পার্টির
জাপার কর্মীরা বলছেন, নৌকার প্রার্থীকে ধরাশায়ী করতে বিএনপির সমর্থকেরা তাঁদের প্রার্থীকে ভোট দেবেন।
টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনের উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ আগামীকাল রোববার। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির (জাপা) দলীয় প্রার্থীসহ পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রার্থীরা গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে শেষ মুহূর্তের প্রচারণা চালিয়েছেন। জাতীয় পার্টির কর্মীরা বলছেন, উপনির্বাচনে বিএনপি কোনো প্রার্থী না দিলেও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তাঁরা এককাট্টা। বিএনপি নৌকার প্রার্থীকে ধরাশায়ী করতে তাঁদের প্রার্থীকে ভোট দেবেন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ নভেম্বর টাঙ্গাইল-৭ মির্জাপুর আসনের সাংসদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. একাব্বর হোসেন ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর নির্বাচন কমিশন আসনটি শূন্য ঘোষণা করে।
উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা কমিটির সদস্য খান আহমেদ শুভ। জাতীয় পার্টি (জাপা) থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. জহিরুল ইসলাম। আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জাতীয় পার্টির সাবেক সহসভাপতি নুরুল ইসলাম (মোটরগাড়ি), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী কমরেড গোলাম নওজব চৌধুরী (হাতুড়ি) ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) রুপা রায়চৌধুরী (ডাব)।
খান আহমেদ শুভ গতকাল সকালে তাঁর নিজ ইউনিয়ন উয়ার্শীসহ উপজেলা সদরের বিভিন্ন গ্রামে গণসংযোগ চালিয়েছেন। জাপার জহিরুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম ও রূপা রায়চৌধুরী গতকাল দুপুরে উপজেলা সদরে প্রচারণা চালান। গোলাম নওজব তাঁর নিজ এলাকা জামুর্কী ইউনিয়নে গণসংযোগ করেন।
খান আহমেদ শুভ বলেন, ‘আমি জয়ী হওয়ার বিষয়ে আশাবাদী। কারণ, মির্জাপুর আসনটি আওয়ামী লীগের। প্রয়াত একাব্বর হোসেন এলাকার দৃশ্যমান উন্নয়নকাজ করে গেছেন। তাঁর রেখে যাওয়া অবশিষ্ট কাজ বাস্তবায়ন ও সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণে সহায়তার জন্য দলের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মী আমার জন্য পরিশ্রম করছেন।’
জাপার কর্মীরা বলেন, উপনির্বাচনে বিএনপি কোনো প্রার্থী দেয়নি। তবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তারা এককাট্টা। তারা আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে ধরাশায়ী করতে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দিতে পারেন। ইতিমধ্যে অনেকে তাঁদের প্রার্থীকে সমর্থন জানিয়েছেন। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে তাঁদের প্রার্থী জয়লাভ করবেন।
জাপার প্রার্থী জহিরুল ইসলাম বলেন, বিএনপিসহ তাঁদের শরিক দল নির্বাচনে নেই। ওই দলের সমর্থকেরা আওয়ামী লীগকে পরাজিত করতে তাঁকে ভোট দেবেন। তা ছাড়া আওয়ামী লীগের একটি অংশসহ এলাকার সব পর্যায়ের মানুষ দলমত-নির্বিশেষে তাঁকে সমর্থন জানিয়েছেন। এ জন্য তিনি বিজয়ী হবেন বলে আশা করেন।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ডি এম শফিকুল ইসলাম বলেন, বিএনপি উপনির্বাচন বর্জন করেছে। সে জন্য দল, সহযোগী সংগঠনসহ সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের নির্বাচনসংক্রান্ত সব কাজে অংশগ্রহণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে ভোট দেওয়া না দেওয়া বা তাঁরা কাকে ভোট দেবেন, সেটা তাঁদের ব্যক্তিগত ব্যাপার।
উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রমতে, এ আসনে ভোটার ৩ লাখ ৪০ হাজার ৩৭৯ জন। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শরিফা বেগম জানান, ১২১টি কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।