বিএনপির মনোনয়ন এখনো চূড়ান্ত হয়নি

আজ রোববার অথবা আগামীকাল সোমবার বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হতে পারে। নওগাঁ-৬ আসনে মনোনয়ন পেতে নয়জন দলীয় ফরম সংগ্রহ করেছেন।

বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী (ওপরে বা থেকে) আনোয়ার হোসেন, আল ফারুক জেমস, (নিচে) শেখ রেজাউল ইসলাম ও ইছহাক আলী।
সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের তিনবারের সাংসদ ইসরাফিল আলমের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া নওগাঁ-৬ (রানীনগর ও আত্রাই) আসনে বিএনপির মনোনয়ন এখনো চূড়ান্ত হয়নি। গতকাল শনিবার এই আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছে দলটির মনোনয়ন বোর্ড। তবে ওই বোর্ড এখনো দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ রোববার অথবা আগামীকাল সোমবার বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হতে পারে। নওগাঁ-৬ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেতে নয়জন দলীয় ফরম সংগ্রহ করেছেন। মনোনয়নপ্রত্যাশী নয় প্রার্থীর মধ্যে কে চূড়ান্ত মনোনয়ন পাচ্ছেন, তা নিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যেও নানা জল্পনাকল্পনা চলছে।

বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ওই নয় প্রার্থী হলেন দলটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু সাঈদ রফিকুল আলম, জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ রেজাউল ইসলাম, নওগাঁ পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস শুকুর, রানীনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আল ফারুক, জেলা তাঁতী দলের সাধারণ সম্পাদক ইছহাক আলী, আত্রাই উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য মাহমুদুল আরেফিন ও আত্রাই উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য আতিকুর রহমান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহকারী ওই নয় প্রার্থীই এলাকায় গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। নয়জনই দলের মনোনয়ন পেতে আশাবাদী। দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা মনে করেন, এ আসনে অভিজ্ঞ, আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় প্রার্থীকেই চূড়ান্ত মনোনয়ন দেবেন দলের শীর্ষ নেতারা।

এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী রানীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন। তফসিল অনুযায়ী ১৭ সেপ্টেম্বর প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা আগামী ১৭ অক্টোবর।

এ আসনে ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবির। ২০০৬ সালে তিনি বিএনপি ত্যাগ করে এলডিপিতে যোগ দেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আলমগীর কবিরের ছোট ভাই বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। ওই নির্বাচনে তিনি নৌকার প্রার্থী ইসরাফিল আলমের কাছে পরাজিত হন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে বিএনপিতে যোগ দেন আলমগীর কবির। সেই নির্বাচনে আনোয়ার হোসেন মনোনয়ন চাইলেও আলমগীর কবিরকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।

দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনার দিক থেকে বেশি আলোচনায় আছেন জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ রেজাউল ইসলাম, রানীনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আল ফারুক জেমস ও জেলা তাঁতী দলের সাধারণ সম্পাদক ইছহাক আলী।

স্থানীয় নেতা-কর্মীরা জানান, আলমগীর কবিরের দল ত্যাগের পর ২০০৬ সাল থেকে রানীনগর ও আত্রাই বিএনপিতে বেশি সক্রিয় হন তাঁর ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন। বর্তমানে দুটি উপজেলার ইউনিয়ন ও উপজেলা বিএনপি ও দলটির সহযোগী সংগঠনগুলোর প্রায় সবগুলো কমিটি তাঁর সমর্থিত। তিনি দলীয় মনোনয়ন পেতে এলাকায় প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে আলমগীর কবিরও দলীয় ফরম সংগ্রহ করেননি।

আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘দলের যেকোনো বিপদে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে তা মোকাবিলা করার চেষ্টা করেছি। বিগত ১১ বছরে রানীনগর ও আত্রাই উপজেলার হাজার হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ সময় নেতা-কর্মীদের মামলা থেকে মুক্ত করার জন্য তাঁদের পাশে থেকেছি।’

এই উপনির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হতে আনোয়ার হোসেন ছাড়া আরও আটজন দলীয় ফরম সংগ্রহ করেছেন। তাঁদের মধ্যে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনার দিক থেকে বেশি আলোচনায় আছেন জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ রেজাউল ইসলাম, রানীনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আল ফারুক জেমস ও জেলা তাঁতী দলের সাধারণ সম্পাদক ইছহাক আলী।

দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত আছি। দল যদি মনে করে অভিজ্ঞ কর্মীকে মনোনয়ন দেবে, তাহলে আমি এগিয়ে থাকব।
শেখ রেজাউল ইসলাম, মনোনয়ন প্রত্যাশী

২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রাথমিক পর্যায়ে আলমগীর কবির ও শেখ রেজাউল ইসলামের নাম দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছিল দলের মনোনয়ন বোর্ড। তবে চূড়ান্ত মনোনয়ন পান আলমগীর কবির। শেখ রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত আছি। দল যদি মনে করে অভিজ্ঞ কর্মীকে মনোনয়ন দেবে, তাহলে আমি এগিয়ে থাকব।’

প্রসঙ্গত, এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী রানীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন। তফসিল অনুযায়ী ১৭ সেপ্টেম্বর প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা আগামী ১৭ অক্টোবর।