বিদেশে পাঠানোর নামে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

কসবা পৌরসভার একটি কমিউনিটি সেন্টারে বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে গোপীনাথপুর ইউপির চেয়ারম্যান মান্নান জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়
প্রথম আলো

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এস এম মান্নান জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে বিদেশে লোক পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে কসবা পৌর শহরে সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা এই অভিযোগ করেন।

শহরের নতুন বাজার এলাকায় একটি কমিউনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পড়েন কসবা উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের চাপিয়া গ্রামের মৃত চান মিয়ার ছেলে আবদুল হক। তিনি বলেন, এক আত্মীয়ের মাধ্যমে ইউপি চেয়ারম্যান এস এম মান্নান জাহাঙ্গীরের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। ২০০৫ সালে মান্নান জাহাঙ্গীর জানিয়েছিলেন, তাঁর কাছে ইরাকের ভিসা আছে। তিনি সেখানে লোক পাঠাতে পারবেন। প্রত্যেককে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা করে দিতে হবে। ওই বছরের ৫ অক্টোবর তাঁর (আবদুল হক) মাধ্যমে চকচন্দ্রপুর গ্রামের বাসু মিয়া, দারু মিয়া, টিঘরিয়া গ্রামের শিশু মিয়া, গুরুরিয়ারুপ গ্রামের হাসেম মিয়া ও চাপিয়া গ্রামের আলমগীর মোট ১৭ লাখ টাকা মান্নান জাহাঙ্গীরকে দেন। পরে আরও ১ লাখ টাকা দেন। কিন্তু তাঁরা কেউ বিদেশ যেতে পারেননি। তাঁদের টাকাও ফেরত দেননি মান্নান জাহাঙ্গীর।

এ ঘটনায় আবদুল হক বাদী হয়ে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে একটি মামলা করেছেন। দীর্ঘদিন পরে মামলা করার বিষয়ে আবদুল হক বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর ইরাক চলে গিয়েছিলেন। এ সময় তিনিও দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন। পরে বারবার তাগাদা দিলেও তিনি টাকা ফেরত দেননি।

আবদুল হক অভিযোগ করেন, টাকা ফেরত চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান বিভিন্ন সময় হুমকি-ধমকি দিয়েছেন। এমনকি তাঁকে মেরে ফেলারও হুমকি দিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন,গুরুরিয়ারুপ গ্রামের সিরাজ মিয়া ও চকচন্দ্রপুর গ্রামের দারু মিয়ার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। মনোয়ারা বেগম বলেন, বিদেশ যেতে তাঁর স্বামী ভিটা-বাড়ি বিক্রি করে দিয়েছেন। কিন্তু তিনি বিদেশ যেতে পারেননি। টাকাও ফেরত পাননি।

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মান্নান জাহাঙ্গীর মুঠোফোনে বলেন, ২০০৪-২০০৫ সালে আবদুল হকের সঙ্গে তাঁর কিছু ব্যবসা ছিল। ১৬ বছর ধরে তাঁর সঙ্গে কোনো লেনদেন নেই। তিনি কোনো টাকাও পাবেন না। আবদুল হক গত ১৫-১৬ বছর কোনো জিডি, মামলা, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে কোনো অভিযোগ করেননি। হঠাৎ করে তাঁর নামে মিথ্যা মামলা করেছেন। একটি মহল রাজনীতিতে ফায়দা তোলার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।