বিদ্যুৎ-সংযোগের তার টানানো বাঁশের খুঁটিতে

ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জ মধ্যবাজার এলাকায় বিদ্যুৎ-সংযোগের তার টানা হয়েছে পাকা খুঁটির বদলে বাঁশের খুঁটিতে। খুঁটিগুলোর অবস্থাও নাজুক। ফলে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জ মধ্যবাজার এলাকায় বিদ্যুৎ-সংযোগের তার টানা হয়েছে পাকা খুঁটির বদলে বাঁশের খুঁটিতে। সাম্প্রতিক ছবি।
প্রথম আলো

ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জ মধ্যবাজার এলাকায় বিদ্যুৎ-সংযোগের তার টানা হয়েছে পাকা খুঁটির বদলে বাঁশের খুঁটিতে। খুঁটিগুলোর অবস্থাও নাজুক। এ এলাকায় গত শুক্রবার তার ছিঁড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এখানে গরুর হাটও বসে। ফলে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

শুক্রবার সকালে তন্বী চৌহান নামের এক গৃহবধূ নিজেদের গৃহপালিত গরু বাড়ির সামনের মাঠে ছেড়ে রেখেছিলেন। সে সময় বিদ্যুতের তারে একটি কাক বসলে তারটি ছিঁড়ে নিচে পড়ে যায় এবং গরুটি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। গরুটিকে বাঁচাতে গিয়ে তন্বীও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।

রোববার সকালে সরেজমিনে কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তির কাছে জানা যায়, বিদ্যুৎ বিভাগকে বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও তাদের পক্ষ থেকে বিতরণ লাইনের কোনো উন্নয়ন হয়নি। তাই তাঁরা বাধ্য হয়ে স্থানীয় ইলেকট্রিশিয়ানের মাধ্যমে বিদ্যুতের তার টানানোর ব্যবস্থা করেন। এর মধ্যে আবার বিদ্যুৎ বিভাগের কিছু কর্মচারীর যোগসাজশে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ-সংযোগ নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।

নিহত তন্বী চৌহানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর ছোট্ট দুটি সন্তান ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। তাদের মধ্যে পাঁচ বছরের কন্যা তরী চৌহান এবং দুই বছরের পুত্র বিজয় চৌহান কিছুক্ষণ পরপর মা, মা বলে কেঁদে ওঠে। তাদের দাদু মনু চৌহান তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তন্বীর স্বামী খোকন চৌহান পেশায় রাজমিস্ত্রি। তাই তিনি সব সময় বাচ্চাদের সময় দিতে পারেন না।

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নারীর মৃত্যুর জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের উদাসীনতাকেই দায়ী করেন সুজন চৌহান ও ভোলানাথ দাস নামের স্থানীয় দুই যুবক। তাঁরা বলেন, সেদিন হাটবার ছিল না বলে বড় বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে।

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শাহজাহান বলেন, এক নারী ও গরুর মৃত্যুর ঘটনায় বিদ্যুৎ বিভাগ কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারে না। তিনি ব্যক্তিগতভাবে সিটি মেয়র এবং বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাচ্ছেন যেন দ্রুত এই ঝুঁকিপূর্ণ সংযোগ পরিবর্তন করা হয়।

বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইন্দ্রজিৎ দেবনাথ কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করে জানান, তিনি অসুস্থ, আইসোলেশনে আছেন।