বরুড়া পৌরসভায় ‘বিদ্রোহী’ তিনজন, বিপাকে আ. লীগের প্রার্থী

মো. বক্তার হোসেন ও মো. বাহাদুরুজ্জামান

মেয়র পদে লড়ছেন সাতজন। এর মধ্যে তিনজন দলের ‘বিদ্রোহী’। তাই আসন্ন নির্বাচন নিয়ে খানিকটা বেকায়দায় রয়েছেন কুমিল্লার বরুড়া পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মো. বক্তার হোসেন।

‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী তিনজন হলেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক মেয়র মো. বাহাদুরুজ্জামান, পৌর যুবলীগের সভাপতি কামরুল হাসান ও আওয়ামী লীগ কর্মী আবু সাঈদ। জেলার নেতারা বলেছেন, শিগগিরই তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় ধাপে ওই পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বরুড়ায় আওয়ামী লীগে দুটি পক্ষ আছে। এক পক্ষে রয়েছেন কুমিল্লা-৮ (বরুড়া) আসনের সাংসদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নাছিমুল আলম চৌধুরী। অপর পক্ষে রয়েছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এ এন এম মইনুল ইসলাম।

এবার পৌরসভা নির্বাচনে সাংসদ নাছিমুলের অনুসারী উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক বক্তার হোসেন দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। উপজেলা চেয়ারম্যানের তিন অনুসারী মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন।

দলীয় কর্মীরা বলেন, বক্তার হোসেন ২০০৯ সালে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন।

বক্তার হোসেন বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও জেলা আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নেবে। দলের সবাই আমার পক্ষে আছেন। ওদের পক্ষে কেউ নেই।’

বাহাদুরুজ্জামান চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ৫ মে বরুড়া পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। ২০১১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালে তিনি দলীয় সমর্থন না পেয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর পৌরসভা নির্বাচনে তিনি দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচন করে পরাজিত হন।

বাহাদুরুজ্জামান তখন বর্তমান সাংসদ নাছিমুল আলম চৌধুরীর প্রার্থী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন পান। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সাংসদের সঙ্গে বাহাদুরুজ্জামানের সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়। এরপর তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান মইনুল ইসলামের পক্ষে অবস্থান নেন। ওই পক্ষের হয়ে তিনি দলীয় মনোনয়ন চান।

বাহাদুরুজ্জামান বলেন, ‘শেষবার নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। বরুড়ার মানুষ দলমত-নির্বিশেষে আমাকে ভোট দেবেন। অতীতের কাজ দেখেই আমাকে মূল্যায়ন করবেন ভোটাররা। বহিষ্কারকে আমি ভয় পাই না।’

আরেক মেয়র প্রার্থী কামরুল হাসান কারাগারে থাকায় তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তিনি কারাগার থেকেই নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন।

অপর প্রার্থী আবু সাঈদ বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি।’

বিদ্রোহী প্রার্থী প্রসঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যান এ এন এম মইনুল ইসলাম বলেন, বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাংসদ নাছিমুল আলম চৌধুরীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন বাহাদুরুজ্জামান। বাকি দুজন বিক্ষিপ্তভাবে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন। তিনি তো নৌকার বাইরে নন।

সাংসদ নাছিমুল বলেন, দলের বিদ্রোহীদের কোনো ভোট নেই। দু-এক দিনের মধ্যে দলীয় সভা করে তাঁদের বহিষ্কার করা হবে।

মেয়র পদে আরও প্রার্থী হয়েছেন বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের মো. জসিম উদ্দিন পাটোয়ারী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা প্রতীকের মো. আবুল বাসার, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির হাতুড়ি প্রতীকের আবদুল কাদের।