বিনিয়োগে আগ্রহী হবে বড় কোম্পানিগুলো

কাজী জিন্নাত আলী খান

পদ্মা সেতুর সর্বশেষ স্প্যান বসে গেছে। এর মধ্য দিয়ে গোপালগঞ্জ, তথা দক্ষিণবঙ্গের মানুষের স্বপ্নের দ্বার খুলে গেল। এই সেতু আমাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল, যার বাস্তবায়ন হতে চলেছে। ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোর যোগাযোগে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হবে এ সেতুর মাধ্যমে। কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, যোগাযোগপ্রযুক্তি ও অবকাঠামো খাতের উন্নয়নের সঙ্গে দ্রুত বদলে যাবে দিগন্ত।

পদ্মা সেতু চালু হলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। দেশ-বিদেশের বড় বড় কোম্পানি বিনিয়োগে আগ্রহী হবে। যোগাযোগব্যবস্থা ভালো থাকলে শিল্পকারখানায় উৎপাদন খরচ কমবে। পদ্মা সেতুর কাজ যখন শুরু হয়, তখন অনেকেই ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ ও বাগেরহাটের অনেক জায়গায় জমি কিনে রেখেছেন। সেতু চালু হলে তাঁরা এসব জায়গায় শিল্পকারখানা গড়ে তুলবেন। এ ছাড়া নতুন করে অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। এতে আমাদের অর্থনীতির চাকা ঘোরার সঙ্গে কিছুটা হলেও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং বেকারত্ব দূর হবে।

গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকায় যেতে এখন আমাদের পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগে। কখনো ফেরি পারাপারের সমস্যার কারণে দুই দিনও অপেক্ষা করতে হয়। সেতু চালু হলে আমরা সকালে রওনা দিয়ে কাজ শেষ করে ওই দিনই ফিরে আসতে পারব। আমাদের একটা বড় স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে।

ব্যবসায়ীরা আগে এসব এলাকায় বিনিয়োগ করতে চাইতেন না। কারণ, সব ধরনের ব্যবসার জন্য ঢাকার সঙ্গে যোগযোগ করতে হয়। আর ঢাকায় যাতায়াতের জন্য ফেরি ব্যবহার করতে হয়। এতে পণ্য ও সময়ের অপচয় হয়। পদ্মা সেতু চালু হলে সেই সমস্যা থাকবে না। বাগেরহাটের মোংলায় বন্দর আছে, সেখান থেকে পণ্য অতি সহজে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া যাবে।

গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকায় যেতে এখন আমাদের পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগে। কখনো ফেরি পারাপারের সমস্যার কারণে দুই দিনও অপেক্ষা করতে হয়। সেতু চালু হলে আমরা সকালে রওনা দিয়ে কাজ শেষ করে ওই দিনই ফিরে আসতে পারব। আমাদের একটা বড় স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে।

পারিবারিকভাবে আমাদের পরিকল্পনা আছে গোপালগঞ্জে ক্রিকেট খেলার সরঞ্জাম তৈরির কারখানা করার। আমাদের মতো অনেকেই এখানে বিনিয়োগ করবেন বলে আশা করছেন। আগে তাঁরা বিনিয়োগ করতে এসেও পিছিয়ে গেছেন। কারণ, শিল্পকারখানা গড়ে তুলতে হলে বিদ্যুতের পাশাপাশি গ্যাসের লাইন দরকার। গ্যাসলাইন না থাকায় তাঁরা শিল্পকারখানা গড়ে তুলতে পারেননি। পদ্মা সেতু চালুর পর যখন গ্যাসের লাইন আসবে, তখন বিনিয়োগে প্রতিযোগিতা শুরু হবে। অন্যদিকে, রেললাইন চালু হলে সহজেই মানুষ কম খরচে যাতায়াতের সুবিধা পাবে।

ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগে গোপালগঞ্জের মানুষের কষ্টের অধ্যায় শেষ হতে চলেছে। আমরা এখন পদ্মা সেতু চালুর অপেক্ষায়।