বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট

অনেক গ্রাহক পর্যাপ্ত পানি পাচ্ছেন না। গ্রাহক না হওয়া অনেকে পানির তীব্র সংকটে আছেন। গরম বাড়তে থাকায় পানির জন্য হাপিত্যেশও বেড়েছে।

পাশের বাড়ি থেকে পানি নিচ্ছে এক শিশু। সোমবার সিলেট নগরের ছড়ারপার এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

সিলেট নগরে পানির সংকট নেই বলে দাবি সিটি করপোরেশনের। তবে এ দাবির সঙ্গে বাস্তবতার মিল নেই। নগরের অনেক এলাকার গ্রাহক পর্যাপ্ত পানি পাচ্ছেন না। গ্রাহক না হওয়া অনেকে পানির তীব্র সংকটে আছেন। গরম বাড়তে থাকায় পানির জন্য হাপিত্যেশও বেড়েছে।

নগরের কাষ্টঘর, লামাপাড়া, সোনারপাড়া, হাতিমবাগ, শ্রাবণবাগ, শাপলাবাগ, টিলাগড়, রাজপাড়া, বাগবাড়ি, ঘাসিটুলা, মজুমদারপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় পানির সংকট রয়েছে। প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে পানি সরবরাহের কথা থাকলেও আগাম কোনো ঘোষণা ছাড়াই কোনো কোনো দিন এসব এলাকায় পানি সরবরাহ করা হয় না। এতে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছায়। পানিসংকট চরম আকার ধারণ করায় গত শনিবার মধ্যরাতে সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন নগরের সোনারপাড়া এলাকার ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা।

শিবগঞ্জ লামাপাড়া এলাকায় অবস্থিত চতুর্থ ও তৃতীয় তলাবিশিষ্ট পাশাপাশি দুটি ভবন। এখানে মোট ২৪টি পরিবার ভাড়াটে হিসেবে থাকে। তবে সিটি করপোরেশনের পানির সংযোগ রয়েছে দুটি। ভবন দুটির তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে রয়েছেন ফয়সল আহমদ (৪০)। তিনি জানান, তাঁদের এলাকায় প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে কয়েক ঘণ্টার জন্য পানি সরবরাহ করে থাকে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। তবে প্রায় সময়ই এই পানির গতি থাকে কম।

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, নগরে ৮ থেকে ১০ লাখ বাসিন্দা রয়েছেন। তাঁদের দৈনিক পানির চাহিদা কমবেশি ৮ কোটি লিটার। তবে সিটি করপোরেশনের পানি শাখার গ্রাহকসংখ্যা প্রায় ১৭ হাজার। তাঁদের পানির চাহিদা দৈনিক ৩ থেকে ৪ কোটি লিটার। ১টি পানি পরিশোধনাগার এবং ৪০টি উৎপাদন নলকূপের সাহায্যে প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করছে সিটি কর্তৃপক্ষ।

সিটি করপোরেশনের কুশিঘাট এলাকায় পানি পরিশোধনাগার থেকে দৈনিক ৮০ লাখ থেকে ১ কোটি লিটার পানি উত্তোলন করা হয়। আর বাকি ৩ কোটি লিটার পানি উত্তোলন করা হয় বিভিন্ন এলাকায় থাকা ৪০টি উৎপাদন নলকূপের সাহায্যে। নগরের তোপখানা এলাকায় অবস্থিত অপর আরেকটি পানি পরিশোধনাগার দুই বছর ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। সেখান থেকে দৈনিক ৫ থেকে ১০ লাখ লিটার পানি উৎপাদন করা সম্ভব হতো।

সিটি করপোরেশনের পানি শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আকবর প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিলেটে কিছু কিছু এলাকায় পানিসংকট কিছুটা আছে। তবে কোথাও তীব্র নয়। গ্রাহকের চাহিদার তুলনায় আমরা পানি উৎপাদন করতে পারি ঠিকই, কিন্তু কিছু অবৈধ সংযোগকারীর কারণে সংকট তৈরি হচ্ছে।’ নগরের ঘাসিটুলা এলাকায় পানিসংকট দূর করতে একটি উৎপাদন নলকূপ স্থাপনের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন আলী আকবর।