বিয়ানীবাজারে নিজ ঘরে কুপিয়ে স্কুলছাত্রীকে হত্যা

কুপিয়ে হত্যা
প্রতীকী ছবি

বাড়ির একটি কক্ষে বসে টেলিভিশন দেখছিল মেয়েটি। পাশের কক্ষে রান্নাবান্নায় ব্যস্ত ছিলেন তার মা ও ভাবি। হঠাৎ চিৎকার ও মেঝেতে ভারী কিছু পড়ার শব্দ শুনে তাঁরা দুজন টেলিভিশনের কক্ষে গিয়ে দেখেন মেয়েটি রক্তাক্ত। এ সময় হাতে থাকা রক্তমাখা দা ফেলে পালিয়ে যান এক যুবক।

আজ মঙ্গলবার দুপুরের ঘটনা এটি। সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলা শেওলা ইউনিয়নের বালিঙ্গা গ্রামে নিজ বাড়ির কক্ষে স্কুলছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহত স্কুলছাত্রীর নাম নাজমিন আক্তার (১৬)। সে বালিঙ্গা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র। হাতে থাকা দা ফেলে পালিয়ে যাওয়া যুবক হচ্ছেন নাজিম উদ্দিন (২৩)। ওই বাড়িতে আশ্রিত ছিলেন নাজিম। খবর পেয়ে বিয়ানীবাজার থানা–পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে মেয়েটির লাশ উদ্ধার করেছে। নাজিমকে ধরতে পুলিশের একটি দল ওই এলাকায় অভিযান চালিয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরের ঘটনা এটি। নিহত স্কুলছাত্রীর নাম নাজমিন আক্তার (১৬)। সে বালিঙ্গা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র।

বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিল্লোল রায় প্রাথমিক তদন্তের বরাতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ঘটনাস্থলে অবস্থান করা পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকে নাজিম পলাতক। তিনি নাজমিনকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন বলে দুজন প্রত্যক্ষদর্শী পাওয়া গেছে। নাজমিনের গলায় একটি গভীর কোপ ও থুতনিতে আরও দুটো কোপ রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়েছে।

নাজমিন স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সামসুল হক চৌধুরী ওরফে কস্তই মিয়ার পালিত কন্যা। পরিবারে সামসুল হকের স্ত্রী, এক ছেলে ও ছেলের বউ রয়েছেন। ঘটনার সময় বাড়িতে কোনো পুরুষ লোক ছিলেন না। নাজমিনের পালিত মা ও ভাবি দুপুরের রান্নাবান্না করতে পেছনের একটি কক্ষে ছিলেন। নাজমিন তখন একাই টেলিভিশন দেখছিলেন।

ওই বাড়ির প্রতিবেশী ও শেওলা ইউপির সদস্য আবুল কালাম খান শেখ প্রথম আলোকে বলেন, পাকা মেঝেতে হঠাৎ দা পড়ার শব্দ শুনে রান্নাঘরে থাকা নাজমিনের মা ও ভাবি এসে দেখেন মেয়েটি রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে আছে। নাজিমের হাতে তখন রক্তমাখা দা। তাঁদেরকে দেখে নাজিম দা ফেলে পালিয়ে যান।

মেয়েটির বিয়ে দেওয়ার কথাবার্তা হচ্ছিল বলে আমরা শুনেছি। নাজিম মেয়েটিকে বিয়ে করতে না পারার আক্রোশ থেকে এ ঘটনা ঘটাতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
হিল্লোল রায়, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), বিয়ানীবাজার থানা

পলাতক নাজিমের বাড়ি মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার নিজ বাহাদুরপুর এলাকায়। সামসুল হক চৌধুরীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক বছর ধরে নাজিম ওই বাড়িতে আশ্রিত থেকে গৃহস্থালির কাজে সহায়তা করতেন। পূর্বআক্রোশ থেকে ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে প্রতিবেশীরা বলছেন। তবে কী আক্রোশ, এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছেন না কেউ।

ওসি হিল্লোল রায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘মেয়েটির বিয়ে দেওয়ার কথাবার্তা হচ্ছিল বলে আমরা শুনেছি। নাজিম মেয়েটিকে বিয়ে করতে না পারার আক্রোশ থেকে এ ঘটনা ঘটাতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। পাশাপাশি পলাতক নাজিমকে ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।’