বিয়ে করলেন জুয়েল, যৌতুকের মামলায় আসামি হলেন জুবায়ের

বগুড়ার ধুনট উপজেলার নছরতপুর গ্রামের টি এম আল জুবায়ের (৪৩) একটি যৌতুকের মামলার আসামি। তাঁর দাবি, তিনি বিয়ে করেননি। অথচ ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর কিশোরগঞ্জ আদালতে এক নারীর করা যৌতুকের মামলায় তিনি জামিনে আছেন। একই গ্রামের তাহের মণ্ডলের ছেলে জুয়েল মাহমুদ (৩৫) তাঁর শিক্ষা সনদের ফটোকপি দিয়ে গাজীপুরের এক কারখানায় চাকরি নেন। পরে ওই প্রতিষ্ঠানের সহকর্মীর সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করেন। বিচ্ছেদের পর ওই নারী কাগজপত্র দেখে টি এম আল জুবায়েরের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জুবায়ের গাজীপুরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক হিসেবে চাকরি করতেন। তাঁর শিক্ষা সনদের ফটোকপি দিয়ে গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নেন গ্রামের পূর্বপরিচিত জুয়েল। চাকরির সুবাদে একই প্রতিষ্ঠানের নারী সহকর্মীর সঙ্গে জুয়েলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৫ সালের ৮ নভেম্বর শিক্ষা সনদ অনুযায়ী টি এম আল জুবায়েরের নাম ও পরিচয় ব্যবহার করে দুই লাখ টাকা দেনমোহরে ওই নারীকে বিয়ে করেন জুয়েল। ওই নারীর বাড়ি কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলায়। তিন বছর পর জুয়েল তাঁর স্ত্রীকে ছেড়ে চলে যান। স্বামীকে খুঁজে না পেয়ে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর ওই নারী বাদী হয়ে শিক্ষা সনদ অনুযায়ী টি এম আল জুবায়ের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা করেন।

টি এম আল জুবায়েরের ভাষ্য, ওই মামলায় শুনানি শেষে কিশোরগঞ্জের আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। ওই পরোয়ানা ধুনট থানায় পাঠানো হয়। পরে তিনি আদালত থেকে জামিন পান। কিন্তু আসল অপরাধী জুয়েল মাহমুদ এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। তিনি বলেন, জুয়েলের প্রতারণার কারণে তাঁর চাকরি হারিয়ে আদালতে দৌড়াতে হচ্ছে। জুয়েলের প্রতারণা নিয়ে তিনি ধুনট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। তিনি তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করবেন।

অভিযুক্ত জুয়েল মাহমুদের মা মরিয়ম বেগমের ভাষ্য, দীর্ঘদিন ধরে ছেলে তাঁর খোঁজখবর রাখেন না। তাঁর সঙ্গে ছেলের কোনো যোগাযোগ নেই। ছেলে কোথায় আছে, তা তিনি জানেন না। একই গ্রামের বাসিন্দা হিসেবে আল জুবায়েরের সঙ্গে তাঁর ছেলে জুয়েলের ভালো সম্পর্ক ছিল। ছেলে কীভাবে প্রতারণা করে বিয়ে করেছে, সেটা তিনি জানেন না।

ধুনট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) প্রদীপ কুমার বর্মণ বলেন, আল জুবায়েরের জিডির তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। জিডির প্রতিবেদন অনুযায়ী জুয়েল মাহমুদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করতে আল জুবায়েরকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।