বিয়ের এক সপ্তাহের মাথায় সড়কে ঝরল তরুণের প্রাণ

লাশ
প্রতীকী ছবি

মাত্র এক সপ্তাহ আগে বিয়ে করেন ইকবাল হোসেন ওরফে মামুন (২৩)। সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুর-তাহিরপুর সড়কে ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। আজ সোমবার দুপুরে ওই সড়কে দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল তাঁর। ইকবাল বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের মধ্য কাপনা গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

পুলিশ ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো আজও মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন ইকবাল। দুপুরে দুজন যাত্রী নিয়ে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা থেকে জেলা শহরে যাচ্ছিলেন। পথে বিশ্বম্ভরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের সদর উপজেলার রাধানগর এলাকায় এসে যাত্রীসহ মোটরসাইকেলটি রাস্তার ওপর ছিটকে পড়ে। এতে তাঁর মাথা থেঁতলে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় মোটরসাইকেলের অন্য দুই যাত্রীও আহত হন। তাঁরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

ইকবালের বাবা নিজাম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ছেলে তিন বছর ধরে মোটরসাইকেল চালায়। মাত্র এক সপ্তাহ আগে বিয়ে করেছে। রোববার শ্বশুরবাড়ি থেকে ফিরে আবার মোটরসাইকেল চালানো শুরু করে। এখন বাড়িতে গিয়ে কী জবাব দেব?’

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, সড়কের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুজ জহুর সেতুর পশ্চিম অংশ থেকে বিশ্বম্ভরপুর-চালবন্দ পর্যন্ত সংস্কারকাজ চলছে। ‘ওয়াটার ট্যাংক’ দিয়ে সড়কে পানি ছিটানো হচ্ছিল। এতে সড়ক কিছুটা পিচ্ছিল ছিল। ইকবালের মোটরসাইকেলটি দ্রুতবেগে ঘটনাস্থলে এসে ওয়াটার ট্যাংকটিকে পাশ কাটাতে গিয়ে সড়কে ছিটকে পড়ে। ওই ট্যাংকের চাকার নিচে ইকবালের মাথা পড়ে যায়।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘সিলেটের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়ক সংস্কারের কাজ করছে। দুর্ঘটনায় একজন মোটরসাইকেলচালকের মৃত্যুর খবর শুনেছি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ওই চালকের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে এবং বিষয়টি মানবিক দিক বিবেচনায় দেখার জন্য বলেছি।’

সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সুনামগঞ্জ শহরতলির রাধানগর পয়েন্টে সড়ক দুর্ঘটনায় ইকবাল হোসেন নামের এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। থানায় এ নিয়ে এখনো কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।