বিয়ের চার দিনের মাথায় নববধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, স্বামী গ্রেপ্তার

ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
প্রতীকী ছবি

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় বিয়ের চার দিনের মাথায় সেনুয়ারা বেগম (২১) নামের এক নববধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় সেনুয়ারা বেগমের স্বামী সুবল রায়হানকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের কাউকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় আজ সোমবার তাহিরপুর থানায় সেনুয়ারা বেগমের বাবা উমর আলী বাদী হয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে সুবল রায়হানের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন। পরে পুলিশ সুবল রায়হানকে গ্রেপ্তার করে। তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানায়, বিয়ের আগে সেনুয়ারার বেগমের বড় বোন সানোয়ারা বেগম সুবল রায়হানকে কিছু টাকা দেবেন বলে কথা দিয়েছিলেন। এই টাকা দিয়ে তাঁর ঋণ পরিশোধ করার কথা ছিল। কিন্তু বিয়ের পর সেই টাকা না দেওয়ায় সুবল রায়হান সেনুয়ারা বেগমকে টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন।

মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার উপজেলার দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের কাউকান্দি গ্রামের আবদুল জলিলের ছেলে সুবল রায়হানের সঙ্গে বিয়ে হয় একই ইউনিয়নের চতুরভুজ গ্রামের উমর আলীর মেয়ে সেনুয়ারা বেগমের। বিয়ের পর থেকে সেনুয়ারা বেগম শ্বশুরবাড়িতেই আছেন। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় সেনুয়ারা রান্নাঘরে শাশুড়িকে রান্নায় সহযোগিতা করছিলেন। তখন হাওরে ছিলেন সুবল রায়হান। একপর্যায়ে শাশুড়ি রান্নাঘর থেকে চলে যান। কিছু সময় পর বাড়ির অন্যরা রান্নাঘরে গিয়ে দেখেন, সেখানে ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না প্যাঁচানো সেনুয়ারা বেগমের লাশ ঝুলছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠায়।

পুলিশ জানায়, সুবল রায়হান ঋণগ্রস্ত ছিলেন। পাওনাদারেরা তাঁর বাড়িতে গিয়ে নানাভাবে টাকার জন্য চাপ দিতেন। বিয়ের আগে সেনুয়ারার বেগমের বড় বোন সানোয়ারা বেগম সুবল রায়হানকে কিছু টাকা দেবেন বলে কথা দিয়েছিলেন। এই টাকা দিয়ে তাঁর ঋণ পরিশোধ করার কথা ছিল। কিন্তু বিয়ের পর সেই টাকা না দেওয়ায় সুবল রায়হান সেনুয়ারা বেগমকে টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। এ নিয়ে তাঁকে নানা কটু কথাও বলেছেন তিনি। এ কারণেই ক্ষোভে-অভিমানে সেনুয়ারা বেগম আত্মহত্যা করেছেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন সানোয়ারা বেগম।

বিষয়টি নিশ্চিত করে তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল লতিফ তরফদার বলেন, ‘সেনুয়ারার পরিবারের কাছে সুবলের টাকা চাওয়ার বিষয়টি আমরাও প্রাথমিকভাবে জেনেছি। যেহেতু মামলা হয়েছে, তাই তদন্তে এখন ঘটনার পুরো বিষয় বেরিয়ে আসবে।’