বিয়ের ৮ মাসেই লাশ হলেন গৃহবধূ, স্বামী গ্রেপ্তার

লাশ উদ্ধার হওয়া গৃহবধূ মেহেরুন নেছা
ছবি: সংগৃহীত

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায় বিয়ের আট মাসের মধ্যে লাশ হলেন গৃহবধূ মেহেরুন নেছা ওরফে বুলবুলি (১৯)। আজ সোমবার সকালে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এর আগে রোববার রাতে উপজেলার রায়কালী বালুকাপাড়া গ্রামে স্বামীর বাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

মেহেরুন নেছার মা ছামছুন নাহার দাবি করেন, যৌতুকের টাকা চেয়ে না পেয়ে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেহেরুন নেছাকে নির্যাতনের পর শ্বাস রোধ করে হত্যা করেছেন। এই হত্যার ঘটনাকে আড়াল করতে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালানো হচ্ছে। তবে মেহেরুনের শ্বশুরবাড়ির লোকজন বলছেন, তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

এ ঘটনায় করা মামলায় মারা যাওয়া গৃহবধূর স্বামী রাকিবুল ইসলামকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মেহেরুন নেছা নওগাঁ সদর উপজেলার ধোপাইকুড়ি গ্রামের আবদুল মালেকের মেয়ে।

গৃহবধূর স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাত্র আট মাস আগে মেহেরুন নেছার সঙ্গে আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী বালুকাপাড়া গ্রামের রাকিবুল ইসলামের বিয়ে হয়। তিনি একজন মুরগির খামারি। রাকিবুল গ্রামের বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা ধার নেন। এ নিয়ে তাদের সংসারে অশান্তি হয়। চড়া সুদে ঋণ নেওয়াকে কেন্দ্র করে গতকাল বিকেলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া লাগে। একপর্যায়ে রাকিবুল তাঁর স্ত্রীকে মারধর করেন। রাতে বাড়ির একটি কক্ষে মেহেরুন নেছার লাশ পাওয়া যায়।
মেহেরুনের মা ছামছুন নাহারের ভাষ্য, ‘বিয়ের পর এক লাখ টাকা যৌতুক দিয়েছি। কয়েক দিন ধরে যৌতুকের জন্য আমার মেয়েকে তাঁর স্বামী, শ্বশুর, ভাশুর সবাই মিলে চাপ দিচ্ছিলেন। যৌতুকের টাকা না পেয়ে তাঁরা আমার মেয়েকে মেরে ফেলেছেন।’
লাশের সুরতহাল করা আক্কেলপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) উজ্জ্বল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মেহেরুনের গলায় দাগ আছে। লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় গৃহবধূর মা বাদী হয়ে স্বামীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা করেছেন বলে আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল লতিফ খান জানান। তিনি বলেন, গৃহবধূর স্বামী রাকিবুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রাকিবুল ইসলামের ভাষ্য, কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে তিনি তাঁর স্ত্রীকে একটি থাপ্পড় দিয়েছেন। তাঁর স্ত্রী আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন।