বীর মুক্তিযোদ্ধাকে মারধরের ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান সাময়িক বরখাস্ত

টিয়াখালী ইউপির চেয়ারম্যান সৈয়দ মশিউর রহমান
ছবি: সংগৃহীত

এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে মারধর করার অপরাধে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ মশিউর রহমানকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মো. আবু জাফর রিপন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের ওই প্রজ্ঞাপন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহ আলমের ঘরে ঢুকে চাঁদা দাবি ও তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করার অভিযোগে টিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কলাপাড়া থানায় মামলা হয়। ওই মামলায় কারাগারে থাকায় তাঁর ইউপির ক্ষমতা প্রয়োগ প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণ থেকে সমীচীন নয়। এ ছাড়া ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মশিউর রহমানের অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিষদসহ জনস্বার্থের পরিপন্থী বিবেচনায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯–এর ধারা ৩৪ (১) অনুযায়ী তাঁকে তাঁর পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

সন্ত্রাসীদের রামদার কোপে বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে পাশের আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

গত বছরের ২৯ নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহ আলম তাঁর মালিকানাধীন বিসমিল্লাহ ইটভাটার কার্যালয়ে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। সন্ত্রাসীরা লাঠি দিয়ে তাঁকে বেধড়ক পেটায়। এরপর সন্ত্রাসীরা রামদা দিয়ে তাঁকে কোপায়।

সন্ত্রাসীদের রামদার কোপে বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে পাশের আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এরপর তাঁকে পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত তাঁকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহ আলমের স্ত্রী আকলিমা বেগম গত ২৯ নভেম্বর রাতে বাদী হয়ে কলাপাড়া থানায় মামলা করেন। মামলা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ অভিযান চালিয়ে টিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মশিউর রহমান, তাঁর স্ত্রী খাদিজা আক্তারসহ মামলার পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন পুলিশ তাঁদের আদালতে হাজির করলে বিচারক তাঁদের কারাগারে পাঠিয়ে দেন।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের আদেশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।