বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সেজে সরকারি চাকরিতে ১৪ বছর

বগুড়ার আদমদীঘিতে বীর মুক্তিযোদ্ধার সনদ জালিয়াতি করে তাঁর সন্তান সেজে সরকারি চাকরি করার অভিযোগ উঠেছে মাহাবুবুল হক নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। মুক্তিযোদ্ধার নামের সঙ্গে তাঁর বাবার নামের মিল থাকায় এমন ঘটনা ঘটেছে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে জানিয়েছে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড।

গত রোববার তদন্ত কমিটি এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করলে ঘটনাটি জানাজানি হয়। তদন্তে জড়িত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাহাবুবুল হকের বাড়ি উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের বাগবাড়ি গ্রামে। তিনি বর্তমানে চাঁপাইনবাবগঞ্জের হরিমোহন সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। সেখানে তিনি ১৪ বছর ধরে চাকরি করছেন।

চাকরি নেওয়ার সময় মাহাবুবুল হকের জমা দেওয়া বাবার মুক্তিযোদ্ধা সনদ যাচাইয়ের জন্য সম্প্রতি আদমদীঘি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডকে অনুরোধ করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। এর পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড তদন্ত শুরু করে। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড জানায়, বাগবাড়ি গ্রামে জসিম উদ্দিন নামের এক বীর মুক্তিযোদ্ধা আছেন। তাঁর এক প্রতিবেশীর নামও জসিম উদ্দিন। ওই প্রতিবেশীর ছেলে মাহাবুবুল হক।

আদমদীঘি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার আবদুল হামিদ বলেন, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সেজে চাকরি নেওয়ার অভিযোগটির তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, মাহাবুবুল হক ২০০৭ সালের ৬ জানুয়ারি চাকরিতে যোগ দেন। সম্প্রতি তাঁর মুক্তিযোদ্ধা সনদ জাল বলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের রাজশাহী কার্যালয়ে অভিযোগ করা হয়। মাউশির উপপরিচালক বিষয়টি তদন্তের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিনের ছেলে মনছুর রহমান জানান, মাহবুবুল হক নামে তাঁর কোনো ভাই নেই। প্রতিবেশী মাহাবুবুল তাঁর (মনছুর) বাবার মুক্তিযোদ্ধা সনদ ব্যবহার করে চাকরি নেন। এ বিষয়ে কথা বলতে মাহবুবুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মুঠোফোনে কথা বলতে রাজি হননি।