বৃদ্ধকে খুনের অভিযোগে মেয়ে, জামাতা ও নাতি গ্রেপ্তার

নোয়াখালীর কবিরহাটে মহিন উদ্দিন হত্যা মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার নিয়ে ব্রিফিং করেন জেলা পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম
ছবি: প্রথম আলো

নোয়াখালীর কবিরহাটে বৃদ্ধ মহিন উদ্দিন হত্যা মামলার চার আসামির তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নিহত বৃদ্ধের মেয়ে, তাঁর স্বামী ও এক ছেলে। আরেক ছেলে পলাতক। সম্পত্তির লোভে স্বামী ও দুই ছেলেকে নিয়ে মহিন উদ্দিনকে তাঁর মেয়ে হত্যা করেছেন বলে মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে।

কবিরহাট উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের উত্তর সুন্দলপুর গ্রামে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে গত ৩০ এপ্রিল। ঘটনার পর পরই মহিন উদ্দিনের মেয়ে শাহিন আক্তার, তাঁর স্বামী নুর নবী ওরফে সুমন, তাঁদের দুই ছেলে ইউছুফ শামীম ও ইউসুফ নবী ওরফে অন্তর আত্মগোপনে চলে যান। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে গাজীপুরের জয়দেবপুরের সালনা এলাকা থেকে তাঁদের মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে নোয়াখালীর কবিরহাট থানার পুলিশ।

এ বিষয়ে আজ বুধবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন জেলা পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম। তিনি বলেন, গত ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যা ছয়টার দিকে কবিরহাট উপজেলার উত্তর সুন্দলপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে মেয়ে ও নাতিদের মারধরে আহত মহিন উদ্দিনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পরদিনই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন শহীদুল ইসলাম।

পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় স্থানীয় লোকজনের বক্তব্য শুনে বিস্মিত হয়েছিলেন তিনি। জানতে পারেন সম্পত্তির কারণে নিজের আদরের মেয়ে, মেয়ের জামাতা ও নাতিরা মিলে বৃদ্ধ মহিন উদ্দিনকে মারধর করে মেরে ফেলেছেন। থানা-পুলিশকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন শহীদুল ইসলাম। সে অনুযায়ী বেশ কয়েকটি স্থানে অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করা হয় ব্রিফিংয়ে।

বৃদ্ধ মহিন উদ্দিনকে হত্যার অভিযোগে তাঁর আরেক মেয়ে বিবি কুলছুম ওরফে লাভলী বাদী হয়ে কবিরহাট থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় তিনি আসামি করেন বোন শাহিন আক্তার, তাঁর স্বামী নুর নবী, দুই ছেলে ইউছুফ শামীম ও ইউছুফ নবীকে।

পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম বলেন, মহিন উদ্দিনের পাঁচ মেয়ে। তাঁর কোনো ছেলে ছিল না। মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার পর সবাইকেই বাড়ির আশপাশে জায়গা দিয়ে বসতি গড়ে দিয়েছেন। এরপরও বাড়ির কিছু জায়গা নিয়ে মেজ মেয়ে শাহিন আক্তার বাবার সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। কথা ছিল ঈদুল ফিতরের পর সালিসি বৈঠকের মাধ্যমে তা মীমাংসা করা হবে।