বৃষ্টি যেখানে কৃষকের স্বস্তি হয়ে ঝরেছে

বৃষ্টি
ফাইল ছবি

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় গতকাল শনিবার রাত থেকে আজ রোববার সকাল পর্যন্ত হালকা ও মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির কারণে হাসির ঝিলিক ও স্বস্তি দেখা গেছে কৃষকের মুখে।

কৃষকেরা জানিয়েছেন, উপজেলার কৃষকেরা বোরো ফসলের ওপর নির্ভরশীল। এখন বোরোর সবুজ চারা থেকে ধান বের হওয়ার উপযুক্ত সময়। বৃষ্টি না হওয়ায় খরায় অনেক সবুজ চারা লালচে হয়ে (জ্বলে) যাচ্ছিল। ১৫ দিন ধরে বৃষ্টির জন্য কৃষকেরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন। অবশেষে দেখা মেলে সেই কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির। এতে কৃষকেরা উচ্ছ্বসিত।

জগন্নাথপুর উপজেলার স্বজনশ্রী গ্রামের কৃষক ইলিয়াস আহমেদ বলেন, এবার তিনি ছয় কেদার (৩০ শতকে এক কেদার) জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছেন। বৃষ্টি না হওয়ায় চারাগুলো খরায় লালচে হয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। এতে তিনি দুশ্চিন্তায় ছিলেন। অবশেষে বৃষ্টি হওয়ায় তিনি খুশি। আশা করছেন শিগগিরই চারা থেকে ধান বের হবে।
বৃষ্টিতে কৃষকেরা খুশি হলেও ফসল রক্ষা বাঁধের অনেক প্রকল্পের লোকজন দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বলে উল্লেখ করেন উপজেলার হাওর বাঁচাও আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা নির্মল দাশ। তিনি বলেন, যাঁরা বালু–মাটি দিয়ে বেড়িবাঁধের কাজ করছেন, তাঁদের বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। হাওর ঘুরে দেখা গেছে, ৩, ৫, ৬, ৭ নম্বরসহ কয়েকটি প্রকল্পে এক দিনের বৃষ্টিতে কিছু অংশে ফাটল ধরেছে।

তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড জগন্নাথপুর উপজেলার মাঠ কর্মকর্তা উপসহকারী প্রকৌশলী হাসান গাজী বলেন, কৃষক ও বেড়িবাঁধের জন্য বৃষ্টি আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। বৃষ্টির পর যেসব বেড়িবাঁধে কিছু ত্রুটি দেখা দিয়েছে, সেগুলো সংস্কার করা হবে। হাওর ঘুরে বড় ধরনের কোনো ফাটল কিংবা ধসের ঘটনা চোখে পড়েনি। ছোটখাটো ত্রুটি ঠিক করার জন্য বলা হয়েছে।

বোরো ধানের জন্য এই মুহূর্তে বৃষ্টি খুবই প্রয়োজন ছিল বলে মনে করেন জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত ওসমান মজুমদার। তাঁর ভাষ্য, এই বৃষ্টির ফলে চারা থেকে ধান বের হবে। এবার জগন্নাথপুর উপজেলায় ২০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে।

জগন্নাথপুর উপজেলা হাওরের ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণ সংস্কার তদারক কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান বলেন, উপজেলায় ৩৭টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ সংস্কারকাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সার্বিক অগ্রগতি সন্তোষজনক। বৃষ্টিতে বোরো ধান ও বেড়িবাঁধের ভালো হয়েছে। বাঁধের মাটি শক্ত হয়ে বসবে। বৃষ্টিতে বাঁধের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি।