বৃষ্টিতে বিপাকে মাগুরার কৃষকেরা, কাটা ধানও ঘরে তুলতে পারছেন না

বৃষ্টির আগে কেটে রাখা ধান পানিতে তলিয়ে থেকে চারা বের হতে শুরু করেছে। তাই ধানের ডগার অংশ কেটে নিয়ে যাচ্ছেন চাষি। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে মাগুরা পুলিশ লাইনস এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

খেতের পাকা ধান কাটার পরপরই বৃষ্টি শুরু হয়। এরপর টানা তিন দিন ধরে থেমে থেমে চলছে বৃষ্টি। বৃষ্টির কারণে খেতে কেটে রাখা ফসল ঘরে তোলা সম্ভব হয়নি। চতুর্থ দিনে বৃষ্টির বিরতিতে ধানের ডগার অংশ কেটে ঘরে তুলছেন চাষিরা।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে মাগুরার বিভিন্ন মাঠে এ চিত্র দেখা যায়। চাষিরা বলছেন, তিন দিন বৃষ্টির পানিতে ডুবে থেকে ধানে চারা গজানো শুরু হয়ে গেছে। আগামী দুই দিন রোদ না হলে সব ধান নষ্ট হয়ে যাবে।

মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাবে জেলায় এ বছর ৩৯ হাজার ৬৩৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ২১ হাজার ৬৪২ হেক্টর জমির ধান কাটা সম্ভব হয়েছে। আর পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে ১ হাজার ২৭০ হেক্টর জমির ধান।

বৃহস্পতিবার দুপুরে দুজন শ্রমিককে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ লাইনস এলাকায় নিজের জমির পানিতে ডুবে থাকা ধান কাটছিলেন কৃষক মো. সোহাগ হোসেন। তিনি জানান, পুলিশ লাইনসের আশপাশে চার বিঘা জমিতে বোরো আবাদ ছিল তাঁর। গত সোমবার ধান কাটা শেষ করতে করতে বৃষ্টি এসে যায়। তিনি বলেন, ধানগাছের আগা কেটে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। বিচালি (খড়) সব নষ্ট। এই ধান বাড়িতে নিয়ে গেলেও আগামী দুই দিন রোদ না হলে সব ধানে চারা গজিয়ে নষ্ট হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে এগুলো তিন দিনের বেশি সময় পানির নিচে রয়েছে।

মো. সোহাগ হোসেন বলেন, এই বৃষ্টির কারণে ইতিমধ্যে তাঁদের চরম ক্ষতি হয়ে গেছে। এক একর জমিতে আগে যেখানে প্রায় ৭০ মণ ধান পাওয়া যেত, এখন সেখানে উৎপাদন প্রতি একরে ২০ মণ কমে আসতে পারে।

চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে শ্রমিকের বেড়ে যাওয়া মজুরি। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক সারা দিন কাজ করে মজুরি নিচ্ছেন ১ হাজার ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। গত বছর বোরো মৌসুমে শ্রমিকের দিনমজুরি ছিল ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা।

মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হায়াৎ মাহমুদ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, বৃষ্টি আর না হলে ধানের বেশি ক্ষতি হবে না। তবে শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় খরচ বেড়ে যাচ্ছে।