বেতন-ভাতার দাবিতে পোশাকশ্রমিকদের ভুখা মিছিল

বকেয়া বেতন ও ভাতার দাবিতে থালা-বাসন নিয়ে পোশাক শ্রমিকেরা ভুখা মিছিল বের করেন। রোববার দুপুরে ঢাকার সভারের আশুলিয়ায়
সংগৃহীত

বকেয়া বেতন ও ভাতার দাবিতে সাভারের আশুলিয়ার ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ডিইপিজেডের) একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা ভুখা মিছিল করেছেন। রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কয়েক শ শ্রমিক এই মিছিলে অংশ নেন।

এপ্রিল মাসে ডিইপিজেডের এ ওয়ান বিডি লিমিটেড নামের কারখানাটি বন্ধ হওয়ার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির ১ হাজার ১০০ শ্রমিক তাঁদের বকেয়া বেতন ও ভাতার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।

পুলিশ ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আন্দোলনের অংশ হিসেবে কয়েক শ শ্রমিক রোববার আশুলিয়া প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে থালাবাসন হাতে প্রেসক্লাবের সামনে থেকে তাঁরা ভুখা মিছিল বের করেন। মিছিলটি পুরাতন ও নতুন ডিইপিজেডসহ বাইপাইল ও জামগড়া হয়ে বেলা দেড়টার দিকে প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এরপর তাঁরা আগের ঘোষণা অনুযায়ী, প্রেসক্লাবের সামনে বসে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন। এই কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

অবস্থান কর্মসূচি থেকে এ ওয়ানের শ্রমিকেরা বলেন, এপ্রিল মাসে কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর তিন মাস আগে থেকেই কারখানার ১ হাজার ১০০ শ্রমিককে বেতন ও ভাতা দেওয়া হচ্ছিল না। কারখানা বন্ধ করার পর বেতন ও ভাতা পরিশোধ করে তাঁদের অব্যাহতি না দেওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী, তাঁদের ১০ মাসের বেতন–ভাতা পাওনা আছে। তাঁরা আরও বলেন, ১০ মাসে কারখানা বা ডিইপিজেড কর্তৃপক্ষ কিংবা সরকারের কোনো মহল তাঁদের বেতন ও ভাতা পরিশোধে দায়িত্ব নেয়নি। ডিইপিজেডের পক্ষ থেকে বারবার আশ্বাস দিয়েও শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করা হয়নি।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির আশুলিয়া থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক জিয়াদুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ ১০ মাস ধরে বেতন ও ভাতা না পেয়ে শ্রমিকেরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। অনেকে ধারদেনা করে পরিবার–পরিজন নিয়ে কোনো রকমে বেঁচে আছেন। করোনার কারণে পোশাক খাতে নাজুক পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় অন্য কোনো কারখানায় নতুন করে শ্রমিকদের চাকরি হচ্ছে না। কোনো উপায় না পেয়ে অনেকে পরিবার নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন। কিন্তু বাড়িতে গিয়েও তাঁরা ভালো নেই। তিনি আরও বলেন, এ ওয়ানের শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানে মালিক ও ডিইপিজেড কর্তৃপক্ষসহ সরকারের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। এ অবস্থায় আন্দোলন ছাড়া শ্রমিকদের সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই। বকেয়া বেতন ও ভাতা না পাওয়া পর্যন্ত শ্রমিকদের এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।