বেলা বাড়ার সঙ্গে পাটুরিয়া ঘাটে বাড়ছে যাত্রীর ভিড়

মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট থেকে ফেরিতে গাদগাদি করে নদী পার হচ্ছেন ঘরমুখো মানুষ। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে পাটুরিয়ার তিন নম্বর ঘাট এলাকায়
ছবি: আব্দুল মোমিন

রাজধানী ঢাকা থেকে আসা মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে আজ সোমবার সকাল থেকে ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখী যাত্রীর চাপ দেখা যাচ্ছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই চাপ আরও বাড়ছে। তবে সীমিতসংখ্যক ফেরি চলাচলের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এসব যাত্রী। লাশ ও রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স এবং জরুরি পণ্যবাহী গাড়ি ফেরিতে ওঠার সময় যাত্রীরাও হুড়োহুড়ি করে লাফিয়ে উঠে পড়ছেন।

ঘাটসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ঢাকা ছেড়ে আসা হাজারো যাত্রী পাটুরিয়ায় এসে ভিড় করছেন। এসব যাত্রী দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিভিন্ন জেলায় ঈদ উপলক্ষে গ্রামের বাড়িতে ফিরছেন। সকাল থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত সাতটি ফেরিতে যাত্রী ও জরুরি যানবাহন পারাপার করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পাটুরিয়ার তিন নম্বর ঘাটে অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি পণ্যবাহী গাড়ি পারাপারের জন্য বনলতা ফেরি ঘাটে নোঙর করে। এ সময় নদীর পারের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে ফেরিতে উঠতে শুরু করেন। মুহূর্তেই ফেরিতে তিলধারণের ঠাঁই ছিল না। ফেরির ডালাতেও যাত্রীরা উঠে পড়েন। পরে সেখান থেকে যাত্রীদের নামিয়ে বেলা ১১টার দিকে দৌলতদিয়ার উদ্দেশে ফেরিটি ঘাট ছেড়ে যায়। সময় যত গড়াচ্ছে, পাটুরিয়া ঘাটে যাত্রীদের ভিড় ততই বাড়ছে।

এদিকে পাটুরিয়া ঘাটে যাত্রীদের ফেরাতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার টেপড়া এলাকায় উপজেলা প্রশাসন কাজ করছে। বিজিবির সদস্যরাও সেখানে একই দায়িত্ব পালন করছেন। পাটুরিয়া থেকে প্রায় আট কিলোমিটার আগে টেপড়ায় বিভিন্ন প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও বাস থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এসব যানবাহনকে উল্টো পথে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে ঘরমুখী মানুষ দুর্ভোগ সহ্য করে অটোরিকশা, রিকশা ও ভ্যানে করে রওনা হচ্ছেন, এমনকি হেঁটেও অনেকে ঘাটে আসছেন।

বেলা ১১টার দিকে পাটুরিয়ার তিন ও পাঁচ নম্বর ঘাট এলাকায় কয়েক শ যাত্রীকে নদী পারের অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায়। এসব যাত্রী দীর্ঘ সময় আটকে থাকায় প্রচণ্ড অস্থির হয়ে উঠেছেন। শৌচাগার ও খাবার হোটেলের অভাবে নারী ও শিশু যাত্রীদের ভোগান্তি আরও বেশি লক্ষ করা যাচ্ছে।

সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ কবিরসহ অর্ধশত পুলিশ সদস্যকে সরকারের বিধিনিষেধ বাস্তবায়ন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ঘাট এলাকায় দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।

ফেরিতে গাদগাদি করে নদী পার হচ্ছেন ঘরমুখো মানুষ। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে পাটুরিয়ার তিন নম্বর ঘাট এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

ওসি ফিরোজ কবির বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে যাত্রী পারাপারে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও যখন অ্যাম্বুলেন্স এবং জরুরি পণ্যবাহী (পচনশীল পণ্য, দুধ, শিশুখাদ্য, ওষুধ) গাড়ি ফেরিতে ওঠানো হয়, তখনই যাত্রীরা ফেরিতে উঠে পড়েন। কোনো বাধাতেই যাত্রীদের ফেরানো যাচ্ছে না। ফেরি আসার পরই তাঁরা তাড়াহুড়ো করে ফেরিতে উঠে পড়ছেন।

ফেরিতে যাত্রী পারাপারের বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শুধু লাশ, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি পণ্যবাহী গাড়ি পারাপারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে এসব গাড়ি লোড ও আনলোড করার সময় যাত্রীরা ফেরিতে ওঠে পড়েন। নিষেধ ও বাধা দেওয়ার পরও তাঁদের আটকানো যাচ্ছে না।