‘বোমা মেশিন’ মুক্ত পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবি

বৃহত্তর সিলেট পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলওয়ার হোসেন। মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট নগরীর একটি রেস্তোরাঁর সম্মেলন কক্ষে।
ছবি: প্রথম আলো

পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি ও শ্রমজীবী মানুষের পাথর আহরণের সুযোগবঞ্চিত অবস্থার অবসানে ‘বোমা মেশিন’ মুক্ত পাথর কোয়ারি করে খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বৃহত্তর সিলেট পাথর–সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ নামের একটি সংগঠন। তাদের অভিযোগ, কিছু প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় বোমা মেশিন নামের নিষিদ্ধ যন্ত্রের ব্যবহারে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। আর পাথর কোয়ারি বন্ধ থাকায় মাশুল দিচ্ছেন সাধারণ পাথরশ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা।

মঙ্গলবার সিলেটের একটি রেস্তোরাঁর সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষ থেকে ‘বোমা মেশিন’ মুক্ত পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, এলাকার শ্রমজীবী ও ব্যবসায়ী পাথর আহরণ করে যুগ যুগ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। জেলায় বৃহৎ শিল্প-কারখানা না থাকায় একটি বড় জনগোষ্ঠী পাথর কোয়ারির ওপর নির্ভরশীল। অন্যদিকে পরিবেশ বিনষ্টের কারণে স্থানীয় প্রশাসন পাথর কোয়ারি বন্ধ করে দিয়েছে। এ কারণে পাথর উত্তোলন ও বিপণন পেশার সঙ্গে জড়িত লক্ষাধিক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষে আহ্বায়ক দেলওয়ার হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল জলিল, ইলিয়াস উদ্দিন ও সদস্য সাইফুল ইসলাম, নুরুল আমিন, সিরাজুল ইসলাম, শওকত আলী, সাব্বির আহমদ প্রমুখ বক্তব্য দেন। তাঁরা বলেন, বোমা মেশিন মুক্ত, পরিবেশবান্ধব পাথর আহরণের সুযোগ সৃষ্টি করে শ্রমিক-ব্যবসায়ীদের জীবিকা রক্ষা করতে হবে। তা না হলে মানবিক বিপর্যয় দেখা দেবে।

৬ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সংস্কার ও সমন্বয়) মো. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে একটি পরিদর্শক দল কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাটের পাথর কোয়ারি এলাকা পরিদর্শন করেন।

সিলেটের জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বাংলাদেশ খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর (বিএমডি) তদারকিতে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলায় ছয়টি পাথর কোয়ারি থেকে ইজারা বন্দোবস্তের মাধ্যমে পাথর উত্তোলন হয়। ইজারার শর্তে সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলন করতে বলা হয়েছে। কিন্তু দ্রুত পাথর উত্তোলনকাজে যন্ত্রের ব্যবহারের পর থেকে পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ যন্ত্র দিয়ে পাথর তুলতে গিয়ে গর্ত ধসে শ্রমিকদের প্রাণহানির ঘটনাও আছে। ২০১৭ সালের ২৩ জানুয়ারি থেকে গত ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৭৮ জন পাথরশ্রমিক নিহত হন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে সিলেটের সব পাথর কোয়ারি বন্ধ রেখে পাথর খাতে শৃঙ্খলা ফেরানোর চেষ্টা করছে প্রশাসন।