বোয়ালমারীতে দুর্গাপ্রতিমা ভাঙচুর, দুই তরুণ গ্রেপ্তার
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে দুর্গাপূজা আয়োজনের প্রাক্কালে একটি মণ্ডপের দুর্গাপ্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ দুই তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের রামদিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই গ্রামে রামদিয়া কর্মকারপাড়া সর্বজনীন দুর্গাপূজার মণ্ডপে ২৭ বছর ধরে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হচ্ছে। প্রতিবছর টিনের বেড়া দিয়ে একটি অস্থায়ী মণ্ডপ নির্মাণ করে এ পূজার আয়োজন করা হয়। এবারও সেভাবেই পূজা আয়োজনের সব প্রস্তুতি শেষ করা হয়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্থানীয় কয়েকজন তরুণ ওই মণ্ডপে ঢুকে পূজার জন্য নির্মিত দুর্গা ও সরস্বতী প্রতিমার মাথা ভেঙে ফেলেন। এ ছাড়া সব প্রতিমার হাত ও পা ভেঙে ব্যাপক ক্ষতি করেন।
আজ বুধবার দেবীর বোধন এবং আগামীকাল বৃহস্পতিবার ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী দুর্গাপূজার সূচনা হতে যাচ্ছে। পূজার প্রাক্কালে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনাটি খুবই বেদনাদায়ক।
রামদিয়া কর্মকারপাড়া সর্বজনীন দুর্গাপূজা মণ্ডপের সভাপতি সুরেশ চন্দ্র কর্মকার প্রথম আলোকে বলেন, গত শনিবার প্রতিমার রং করা শেষ হয়। সালথার গৌরদিয়া গ্রামের মনোরঞ্জন পাল ২৫ হাজার টাকার বায়না নিয়ে এই প্রতিমা নির্মাণ করেছেন। রং করার পর তিন দিকে টিনের বেড়াযুক্ত মণ্ডপের সামনে কাপড় দিয়ে আড়াল করে রাখা হয়। মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে যখন ওই মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিরা রাতের খাবার খেতে যান, এই সুযোগে অজ্ঞাত দুষ্কৃতকারীরা প্রতিমা ভাঙচুর করে পালিয়ে যায়।
এলাকাবাসীর কাছ থেকে এ খবর জানার পর রাতেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঝোটন চন্দ, মধুখালী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলামসহ উপজেলা পূজা উদ্যাপন কমিটির কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বোয়ালমারী থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, রাতেই পুলিশ ওই গ্রামে অভিযান চালিয়ে এ ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওই গ্রামের বাসিন্দা নয়ন শেখ (২০) ও রাজু মৃধা (২৬) নামের দুই তরুণকে গ্রেপ্তার করে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় ওই মণ্ডপ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মৃণাল কর্মকার বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন।
ওই মণ্ডপের সাধারণ সম্পাদক মৃণাল কর্মকার বলেন, আজ বুধবার দেবীর বোধন এবং আগামীকাল বৃহস্পতিবার ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী দুর্গাপূজার সূচনা হতে যাচ্ছে। পূজার প্রাক্কালে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনাটি খুবই বেদনাদায়ক।’ তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে আমাদের প্রতিমাশিল্পীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি দ্রুত প্রতিমার ক্ষত মিটিয়ে দিতে পারলে আমাদের পক্ষে হয়তো এ বছর পূজা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।’
ফরিদপুর পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অরুণ মণ্ডল জানান, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক অতুল সরকার এবং পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামানকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, জেলা পূজা উদ্যাপন কমিটির দপ্তর সম্পাদক পি কে সরকার ও সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক গৌতম ভদ্রের সঙ্গে তিনি আজ বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।