ব্যবস্থা না নেওয়ায় কাফনের কাপড় কেনার রসিদ জমা দিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী

নির্বাচন
প্রতীকী ছবি

হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে রাজশাহীর মোহনপুরে জাহানাবাদ ইউপি নির্বাচনের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আবদুল লতিফ থানায় জিডি করেছিলেন এক সপ্তাহ আগে। কিন্তু এখনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ওই প্রার্থী কাফনের কাপড় কিনে তার রসিদ আজ শুক্রবার উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে জমা দিয়েছেন।

এর আগে গত রোববার রাতে মুঠোফোনে হত্যার হুমকি পান আবদুল লতিফ। এ ঘটনায় পরদিন তিনি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। এ নিয়ে গত সোমবার প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ‘রাজশাহীতে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীকে হত্যার হুমকি, থানায় জিডি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

মোহনপুর উপজেলার জাহানাবাদ ইউপি নির্বাচনে এবার আবদুল লতিফ ছাড়াও পাঁচজন চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এখানে তৃতীয় ধাপে ২৮ নভেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

জিডিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল লতিফ উল্লেখ করেছিলেন, রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শেষে মোহনপুর সদরে নিজের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। এ সময় তাঁর মুঠোফোনে এক ব্যক্তি কল করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তি তাঁকে বলেন, ‘আমি ২৯টি খুন করেছি। গতকাল তোকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেছিলাম। অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছিস। তুই এলাকায় ঢুকলে তোকে খুন করা হবে।’

আবদুল লতিফ প্রথম আলোকে বলেন, প্রায় এক সপ্তাহ হয়ে গেল তাঁকে মুঠোফোনে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। হুমকিদাতার নির্দিষ্ট ফোন নম্বর জিডিতে জমা দেওয়ার পরও পুলিশ বা প্রশাসন এ ঘটনায় এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষের এই যুগে প্রশাসনের জন্য এ ঘটনার রহস্য বের করা কোনো ব্যাপারই নয়। কিন্তু প্রশাসনের এ ব্যাপারে কোনো তৎপরতা নেই। তাঁকে তো বেঁচে থাকতে হবে। এ কারণে তিনি কাফনের কাপড় কেনার রসিদ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দিয়েছেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল লতিফ কাফনের কাপড় কেনার রসিদ জমা দিয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে বলেছেন, ‘যদি উপযুক্তভাবে প্রশাসন না চালাতে পারেন, তবে আমার জানাজায় যাবেন।’

মুঠোফোনে হত্যার হুমকি পাওয়ায় আতঙ্কে আছেন জানিয়ে আবদুল লতিফ বলেন, তিনি এই ইউনিয়নে জনপ্রিয় মানুষ। ৮০ শতাংশ ভোট তিনি পাবেন। কিন্তু এখানে নৌকার প্রার্থী জেতাতে হলে কারচুপি ছাড়া উপায় নেই। এ কারণে এখন তিনি প্রাণহানির ভয়ে আছেন। এ ঘটনায় তাঁর স্ত্রীও কান্নাকাটি করছেন।

আবদুল লতিফ এই ইউপিতে ২০০৩ সালে বিএনপির শাসনামলে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। তখন আওয়ামী লীগ তাঁকে সমর্থন দিয়েছিল। তবে এবার তিনি আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপত্র চাননি।

মোহনপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জয়নুল আবেদীন প্রথম আলোকে বলেন, আবদুল লতিফ কাফনের কাপড় কেনার একটি রসিদ দিয়ে গেছেন। তিনি তা সৌজন্যতার খাতিরে নিয়েছেন। এটা নির্বাচনী প্রচারণার কোনো ধরন হতে পারে। তিনি আরও বলেন, আজ প্রতীক বরাদ্দ হওয়ার পর এখানে প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়েছে। সবাইকে আইনকানুন মেনে প্রচার-প্রচারণা চালাতে বলা হয়েছে। আইনের ব্যত্যয় হলে তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন।
মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আবদুল লতিফের জিডি নিয়ে কাজ চলছে। এটা একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে হয়ে থাকে। তদন্ত শেষে হুমকিদাতার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।