ব্যবস্থাপকের অপসারণ চেয়ে মৌলভীবাজারে চা-শ্রমিকদের কর্মবিরতি

কর্মবিরতির সময় চা–শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচি। আজ সোমবার বিকেলে মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার কাশীপুর চা-বাগানে
প্রথম আলো

মৌলভীবাজারের রাজনগরে কাশীপুর চা-বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক আতাউর রহমান খানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে চা-শ্রমিকেরা কর্মবিরতি পালন করেছেন। ওই কর্মকর্তার অপসারণ দাবি করে আজ সোমবার সকাল থেকে তাঁরা কাজে যোগদান থেকে বিরত থাকেন। এটি বাংলাদেশ টি বোর্ডের একটি বাগান।

বাগানের চা-শ্রমিকনেত্রী উষা কুর্মি, সরদার জয়রাম, রিপন পাশিসহ চা-শ্রমিকেরা অভিযোগ করেন, কথায় কথায় শ্রমিক ছাঁটাই করার ভয়ভীতি দেখিয়ে শ্রমিকদের দমিয়ে রাখা হচ্ছে। শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। চা-বাগানের গাছ চুরি করে বিক্রি করা হচ্ছে। শ্রমিকেরা অভিযোগ করলেও কোনো লাভ হয়নি। সোমবার থেকে তাঁরা কর্মবিরতি শুরু করেছেন। সহকারী ব্যবস্থাপকের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শ্রমিকেরা।

পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠতে থাকলে বিকেলের দিকে রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

সহকারী ব্যবস্থাপক আতাউর রহমান খানের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শ্রমিকেরা।

চা-বাগান ও চা-শ্রমিক সূত্রে জানা গেছে, কাশীপুর চা-বাগানের আয়তন ১৩৯ একর। এখানে নিয়মিত শ্রমিক ১৬ জন এবং অনিয়মিত শ্রমিক ১৪৩ জন। এটি রাজনগর চা-বাগানের একটি ফাঁড়ি বাগান। আদালতে একটি স্বত্ব মামলা নিষ্পত্তির পর ২০১৮ সালের ১৩ মে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় রাজনগর উপজেলার টেংরা ইউনিয়নের কাশীপুর চা-বাগানের মালিকানার দখল বুঝে নেয় বাংলাদেশ টি বোর্ড। এ সময় টি বোর্ড আতাউর রহমান খানকে বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব দেয়।

সহকারী ব্যবস্থাপক আতাউর রহমান খান কর্মবিরতির সত্যতা নিশ্চিত এবং অভিযোগগুলো অস্বীকার করে সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘চা-বাগানের একজন স্টাফের অভ্যন্তরীণ বদলিকে কেন্দ্র করে শ্রমিকেরা এই কর্মবিরতি পালন করছেন। টি বোর্ড এই স্টাফকে এক বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে বদলির অর্ডার করেছে। আমার বদলি করার এখতিয়ার নেই। ওই বদলির কাগজ আমিই এখনো পাইনি। কাগজ পাওয়ার আগেই তাঁরা আজ সকাল থেকে কর্মবিরতি করছেন।’ সহকারী ব্যবস্থাপক বলেন, ‘এটা সরকারি ডিপার্টমেন্ট। কাজের ওপর নিয়মিত নজরদারি আছে। বাগানের উৎপাদনসহ সবকিছু ঠিকঠাক আছে। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে দেখি কী করা যায়।’