ব্যাংকের সামনে অভিনব কায়দায় স্কুলশিক্ষকের ৩ লাখ টাকা চুরি
ঘড়ির কাঁটায় সকাল ১০টা ৫৪ মিনিট। সোনালী ব্যাংক পঞ্চগড় শাখা থেকে ঋণের তিন লাখ টাকা তুলে একটি লাল ব্যাগে নিয়ে বের হয়েছিলেন স্কুলশিক্ষক ইয়াহিয়া খান। লোকজন আর মোটরসাইকেলের ভিড় তখন ব্যাংকের সামনে। সেখানে রাখা মোটরসাইকেলটির হ্যান্ডেলে টাকার ব্যাগটি রাখতে না রাখতেই পেছন থেকে এক বয়স্ক লোক বলে উঠলেন, ‘আপনার টাকা পড়েছে।’
মাটির দিকে তাকাতেই ইয়াহিয়া খান দেখলেন, ১০, ২০, ৫০ ও ১০০ টাকার কিছু নোট মাটিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে। পকেটে হাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘না আমার টাকা পড়েনি।’ এ সময় পড়ে থাকা কিছু টাকা ইয়াহিয়ার মোটরসাইকেলের নিচে চলে আসে।
পাশ থেকে আরেকজন মাঝবয়সী লোক বলে উঠলেন, ‘টাকাগুলো আমার, একটু তুলে দেন ভাই।’ লোকটির কথায় কান দিয়ে টাকাগুলো তুলতে যান ইয়াহিয়া খান। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই নিজের মোটরসাইকেলে তাকিয়ে দেখেন একটু আগে রাখা তিন লাখ টাকার ব্যাগটি আর নেই। এভাবেই সোমবার সকালে পঞ্চগড় শহরের মসজিদপাড়া এলাকায় পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কসংলগ্ন সোনালী ব্যাংক পঞ্চগড় শাখার সামনে তিন লাখ টাকা চুরির ঘটনা ঘটে।
ইয়াহিয়া খান পঞ্চগড় জেলা শহরের পুরোনো পঞ্চগড়-ধাক্কামারা এলাকার বাসিন্দা। তিনি পঞ্চগড় সদর উপজেলার আমলাহার বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। ঘটনার পর থেকেই ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পঞ্চগড় সদর থানা-পুলিশ তদন্তে নেমেছে। তবে বিকেল পর্যন্ত এ ঘটনায় কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। দিনদুপুরে এমন চুরির ঘটনা জেলা শহরে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
স্কুলশিক্ষক ইয়াহিয়া খান বলেন, ‘মনে হয়, তারা সবাই একই চক্রের। আমাকে ধোঁকা দিতেই হয়তো তারা নিচে কিছু টাকা ফেলে দিয়েছিলেন। পরে আমি বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছি। এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করব। ঋণ করা টাকা ফিরে না পেলে বড় বিপদে পড়ে যাব।’
সোনালী ব্যাংক পঞ্চগড় শাখার ব্যবস্থাপক মো. রেজাউল করিম বলেন, ওই গ্রাহক টাকা নিয়ে বাইরে গিয়ে টাকার ব্যাগটি মোটরসাইকেলে রাখার পরপরই কারা যেন নিয়ে পালিয়েছে। টাকা চুরির সময় কিছু খুচরা টাকা মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়েছিল বলে জানা গেছে। বিষয়টি পুলিশকে জানানোর পর পঞ্চগড় সদর থানা-পুলিশ ব্যাংক থেকে সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে গেছে। এখন তারা ঘটনাটি তদন্ত করছে।
পঞ্চগড় সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বেনজীর আহমেদ বলেন, ঘটনার পর থেকেই সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। আশপাশের জেলার থানাগুলোতে ছবিসহ বার্তা পাঠানো হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, খুব দ্রুত টাকা চুরির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আটক করা সম্ভব হবে।