ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আ.লীগ নেতার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারের বাড়িতে দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়েছে। জেলা শহরের মুন্সেফপাড়া এলাকায় শনিবার।
প্রথম আলো

চার মাসের ব্যবধানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারের বাড়িতে দুর্বৃত্তরা আবার আগুন দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

আল মামুনের অভিযোগ, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম এ ঘটনার জন্য দায়ী। তবে সৈয়দ নজরুল ইসলাম এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

আজ শনিবার বেলা পৌনে একটার দিকে জেলা শহরের মুন্সেফপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আগুনে বাড়ির আসবাব পুড়ে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। ফায়ার সার্ভিসের দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বলেন, এর আগে গত ২৮ মার্চের সহিংসতার সময় আল মামুন সরকারের এই বাসভবন, বাগানবাড়ি এলাকায় তাঁর শ্বশুরবাড়ি, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে থাকা ব্যক্তিগত কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকেরা। এর পর থেকে আল মামুন সরকার ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা অন্যত্র থাকছেন। বর্তমানে বাড়িটির সংস্কারকাজ চলছিল।

আল মামুন বলেন, ‘এটি নিঃসন্দেহে একটি পরিকল্পিত নাশকতার ঘটনা। গত দুই দিন আগে জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম ফেসবুকে শ্বশুরবাড়ি ও আমার বাড়ি সম্পর্কে আপত্তিজনক মন্তব্য করেছেন। এরপর গত শুক্রবার রাতে মাতাল হয়ে একজন আমার শ্বশুরবাড়ির দরজায় গিয়ে অনেক লাথি মেরেছে। আর এখন আমার বাড়িতে আগুনে দেওয়ার ঘটনা ঘটল। আগুনে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।’

অভিযোগের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি যা করি প্রকাশ্যে করি, গোপনে করি না। ফেসবুক টাইমলাইনে আমার সেই মন্তব্য এখনো আছে। আল মামুন সরকারের বাড়িতে আগুন লাগার বিষয়টি মাত্রই আপনার কাছ থেকে জানতে পারলাম। আমি সব সময় নাশকতার বিরুদ্ধে। আর যারা এই কাজটি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’

অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আনিসুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মোল্লা মো. শাহীন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পঙ্কজ বড়ুয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

জেলা ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স কার্যালয়ের উপসহকারী তৌফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া ও পরিদর্শক মোনায়েম বিল্লাহ বলেন, বিষয়টি নিয়ে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, সংশ্লিষ্ট বিভাগ এ ঘটনার তদন্ত করবে। ফায়ার সার্ভিসের মতামতের ভিত্তিতে পুলিশ প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, ফায়ার সার্ভিসের কাছ থেকে প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।