ব্রিটিশ আমলের প্রেসিডেন্ট সেলুনটি জাদুঘরে সংরক্ষণের উদ্যোগ

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ক্যারেজ শপে শোভা পাচ্ছে ব্রিটিশ আমলের প্রেসিডেন্ট সেলুনটি। বৃহস্পতিবার সকালে।প্রথম আলো

রেলওয়ের ঐতিহ্যের স্মারক হয়ে থাকা বিলাসবহুল প্রেসিডেন্ট সেলুন কোচটি জাদুঘরে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ১৯২৭ সালে ব্রিটেনে নির্মিত সেলুনটি দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ক্যারেজ শপে রাখা হয়েছে। সেখানেই কোচটির প্রয়োজনীয় মেরামত হচ্ছে।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান যন্ত্রপ্রকৌশলী (সিএমই) মুহাম্মদ কুদরত-ই-খুদা বৃহস্পতিবার সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, সেলুনটি রেলওয়ে ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আগামী প্রজন্মের জন্য তা অনেক বেশি শিক্ষণীয়। এসব কথা ভেবেই সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় প্রস্তাবিত রেলওয়ে জাদুঘরে তা স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ওপরের নির্দেশনায় জাদুঘরটি শিগগির উদ্বোধন হবে বলে জানান তিনি।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, ব্রিটিশ উপনিবেশ আমলে বিলাসবহুল ওই প্রেসিডেন্ট সেলুনটি ভারতে আনা হয়। এর লোগোতে লেখা রয়েছে সেলুনটি ১৯২৭ সালে ব্রিটেনের একটি কারখানায় তৈরি। মূলত ব্রিটেনের রানি ভারতের বিভিন্ন গন্তব্যে ভ্রমণের জন্য সেলুনটি এখানে বয়ে আনেন। ওই ক্যারেজে ব্রিটেনের রানিসহ পদস্থ কর্মকর্তারা ভারতের বিভিন্ন গন্তব্যে ভ্রমণ করেছেন বলে কিংবদন্তি আছে। দেশ বিভাগের পর ১৯৪৮ সালের ২৮ জুন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান রেলওয়েকে (পিইআর) ওই সেলুনটি উপহার হিসেবে দিয়ে যায় ব্রিটিশ সরকার। এর নম্বর ১২৬৫। অনুরূপ একটি সেলুন ভারতীয় রেলওয়েকেও দেওয়া হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট সেলুনের ভেতরের অংশ। বৃহস্পতিবার সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ক্যারেজ শপে।
প্রথম আলো

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ক্যারেজ শপের ইনচার্জ (এসএসএই) মো. নিজামুল হক জানান, স্বাধীনতার পরে দেশের অনেক রাষ্ট্রপ্রধান ওই প্রেসিডেন্ট সেলুনে ভ্রমণ করেছেন। পরে ১৯৮১ সালে তা অকেজো হয়ে পড়লে সৈয়দপুর কারখানায় নিয়ে আসা হয়। সেলুনটির উল্লেখযোগ্য দিক হলো, তা সম্পূর্ণ কাঠের তৈরি। এর অভ্যন্তরে রয়েছে প্রেসিডেন্টের শয়নকক্ষ, তাঁর স্টাফদের জন্য পৃথক দুটি কক্ষ, রান্নাঘর ও কর্মচারীদের জন্য পৃথক একটি কক্ষ। আরও আছে বিলাসবহুল বাথরুম। এতে আছে হাই কমোড, বেসিন, বাথটাব ও শাওয়ার। এ ছাড়া আছে সভা করার জন্য একটি কনফারেন্স রুম। সাধারণ কোচে আটটি চাকা থাকলেও সেলুনটিতে রয়েছে ১২টি চাকা। এর আসবাব বৈদ্যুতিক ফিটিংস সবই আধুনিক এবং এখনো কার্যকর।