বড় ভাইকে বাঁচাতে ছোট ভাইয়ের কিডনিদান

রুহুল আমিন (বামে) এবং তাঁকে কিডনি দানকারী আপন ছোট ভাই সোয়েব আহমদ (ডানে)
ছবি: সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে বড় ভাইকে বাঁচাতে নিজের কিডনি দান করলেন স্নাতকপড়ুয়া আপন ছোট ভাই। ভাইয়ের প্রতি ভাইয়ের সর্বোচ্চ ভালোবাসার এ নিদর্শন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রশংসা কুড়াচ্ছে। কিডনিদানের সফল অস্ত্রোপচার শেষে তাঁরা দুই ভাই বর্তমানে ঢাকার কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের বালিশ্রী গ্রামের প্রয়াত জহির আলীর তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলে যুক্তরাজ্যপ্রবাসী। মেজ ছেলে রুহুল আমিন (২৫) বাবার মৃত্যুর পর পাঁচ বছর ধরে সংসার সামলানোর দায়িত্ব পালন করছেন। আর ছোট ছেলে সোয়েব আহমদ (২১) সিলেটের মদন মোহন কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

পরিবারের সদস্যরা জানান, গত বছর রুহুল আমিন হঠাৎ বুকের মধ্যে ব্যথা অনুভব হলে স্বজনেরা তাঁকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কিডনিজনিত সমস্যা ধরা পড়ে। গত সাত মাস ঢাকার কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন রুহুল। চিকিৎসকেরা তাঁর দুটি কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে যত দ্রুত সম্ভব কিডনি প্রতিস্থাপনের কথা জানান। এমন দুঃসংবাদে হতাশায় পড়ে পরিবারটি। খোঁজা শুরু হয় কিডনিদাতার। সেই সময় আপন ছোট ভাই সোয়েব ভাইকে বাঁচাতে পাশে দাঁড়ান। স্বেচ্ছায় কিডনি দেবেন জানান সোয়েব। পরে গত বুধবার পরিবারের সবার সম্মতিতে ঢাকার কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে তাঁদের অস্ত্রোপচার করা হয়। বর্তমানে তাঁরা দুই ভাই সুস্থ।

সোয়েবের ভগ্নিপতি কাজি আহমদ বলেন, ‘দ্রুত কিডনি প্রতিস্থাপন নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় ছিলাম। ছোট ভাই কিডনি দান করে বড় ভাইকে বাঁচিয়ে দিল।’

কিডনি প্রতিস্থাপনের সত্যতা নিশ্চিত করে সোয়েবের ভগ্নিপতি কাজি আহমদ বলেন, ‘অপারেশনের পর এখন তাঁরা দুই ভাই সুস্থ। দ্রুত কিডনি প্রতিস্থাপন নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় ছিলাম। ছোট ভাই কিডনি দান করে বড় ভাইকে বাঁচিয়ে দিল।’

রানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ভাইয়ের প্রতি ভাইয়ের ভালোবাসার এমন নিদর্শন সত্যিই প্রশংসনীয়। সমাজের নানা অসংগতির মধ্যে পারিবারিক ভালোবাসার এ ধরনের দৃষ্টান্ত আশা জাগায়। সুস্থ হয়ে এলে আমরা তাঁদের সংবর্ধনা দেব।’