বয়সের প্রমাণ দাখিল, সেই কিশোরকে সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ

আদালত
প্রতীকী ছবি

সিলেট শহরতলির শাহপরান থানার মীরমহল্লায় দুই সন্তানসহ মা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আটক কিশোরকে (১৭) গাজীপুরের টঙ্গীর কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ওই কিশোরের বয়সের প্রমাণপত্র দাখিল করায় আজ সোমবার বেলা আড়াইটায় শিশু আদালতের বিচারকের দায়িত্ব পালন করা জেলা ও দায়রা জজ বজলুর রহমান এ আদেশ দেন।

সমাজসেবা অধিদপ্তর সিলেটের প্রবেশন কর্মকর্তা তমির হোসেন চৌধুরী প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, শিশু আদালতে কিশোরের বিচার শিশু আইন–২০১৩ ও জাতীয় শিশু সুরক্ষানীতি মেনে চলবে। এই বিচার প্রক্রিয়ায় শিশু আইন নির্দেশিত সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন সহায়তা করবে।

শাহপরান থানা–পুলিশ সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে মীরমহল্লার বাসায় শয়নকক্ষ থেকে রুবিয়া বেগম চৌধুরী (৩০), মেয়ে জান্নাতুল হোসেন (৯) ও ছেলে তাহসান হোসেন খানের (৭) লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় কক্ষে রক্তমাখা ছুরিসহ রুবিয়ার সৎছেলেকে (১৭) আটক করে পুলিশ। ওই কিশোর পুলিশকে জানায়, ভাত খেতে চেয়ে না পাওয়ায় সৎমা ও ভাই-বোনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে সে। এ ঘটনায় গত শুক্রবার রাতে নিহত রুবিয়ার ভাই আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে শাহপরান থানায় হত্যা মামলা করেন।

তবে গত শনিবার দুপুরে মহানগর পুলিশ ওই কিশোরের নাম ও পরিচয় উল্লেখ করে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠায়। এতে হত্যা মামলার আসামি হিসেবে কিশোরের বয়স ১৯ বছর উল্লেখ করা হয়। এরপর ওই কিশোরের বাবার (৫২) সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁর ছেলের বয়স ১৮ বছরের নিচে। আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতেও ওই কিশোর বলেছে, তার বয়স ১৭ বছর।
১৭ বছর বয়সী কিশোরের বয়স মামলার এজাহারে ১৯ বছর নির্ধারণ করা প্রসঙ্গে শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আনিসুর রহমান জানিয়েছিলেন, বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে পরিবার ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসা করে।

প্রবেশন কর্মকর্তা তমির হোসেন চৌধুরী বলেন, কোনো প্রমাণপত্র ছাড়া একজন কিশোরের বয়স নির্ধারণ করে মামলা ও গ্রেপ্তার দেখানো আইনসিদ্ধ হয়নি। শাহপরান থানা–পুলিশের ‘শিশু ডেস্ক’–এর মাধ্যমে ওই কিশোরের বয়সের প্রমাণপত্র সংগ্রহ করে শিশু আদালতে উপস্থাপন করা হয়। ওই কিশোর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার সনদপত্র অনুযায়ী বয়স ১৭ বছর ১ মাস। বয়সের এই প্রমাণপত্র শিশু আদালতে দাখিল করলে বিচারক এ আদেশ দেন। কাল মঙ্গলবার তাকে টঙ্গীতে পাঠানো হবে।