ভাঙনের কবলে বিলের মাঝের সড়ক, যান চলাচল বন্ধ
নওগাঁ সদর উপজেলায় গুটারবিলের মাঝ দিয়ে চলা নওগাঁ-হাঁসাইগাড়ী সড়কটি ভাঙনের কবলে পড়েছে। ভাঙনের ফলে সড়কটি সরু হয়ে যাওয়ায় চার দিন ধরে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় লোকজন। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
সোমবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার শিকারপুর ও হাঁসাইগাড়ী ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গুটারবিলের মাঝ বরাবর নির্মিত পাকা সড়কটির দেড় কিলোমিটার অংশের দুই ধার বিলের পানির ঢেউয়ের তোড়ে ভেঙে যাচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে ভেঙে সড়কটি সরু হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও সড়কটি প্রায় বিচ্ছিন্ন হওয়ার অবস্থা। স্থানীয় লোকজন বাঁশ, গাছের ডাল ও কচুরিপানা দিয়ে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছেন। ভাঙনকবলিত সড়কটি দিয়ে স্বাভাবিক যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সড়কটি যাতে আর ভেঙে না যায়, সে জন্য গত শুক্রবার থেকে প্রশাসনের নির্দেশে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে শিকারপুর ইউনিয়নের গোয়ালি মোড় থেকে হাঁসাইগাড়ী ইউনিয়নের কাটখৈর বাজার পর্যন্ত ভাঙনকবলিত সড়কটির দেড় কিলোমিটার অংশ লোকজন হেঁটে চলাচল করছেন। এই সড়ক দিয়ে নওগাঁর হাঁসাইগাড়ী, বলিহার ও শিকারপুর, মান্দার কাশোপাড়া, কশব ও বিষ্ণুপুর এলাকার লোকজন নওগাঁ শহরে যাতায়াত করেন। ওই পথে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার পথ ঘুরে লোকজনকে নওগাঁ শহরে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
হাঁসাইগাড়ী ইউনিয়নের কালিপুর গ্রামের বাসিন্দা মাসুদ রানা, রাজ্জাক, কাটখৈর গ্রামের সিরাজুল, মজিবর রহমানসহ বেশ কয়েকজন জানান, ২০১২-১৩ সালে গুটারবিলের মাঝ দিয়ে সড়কটি নির্মিত হওয়ার পর এবারই প্রথম এত বেশি ভাঙনের কবলে পড়েছে। রাস্তাটির দুই ধার ব্লক দিয়ে বেঁধে দেওয়া আছে। বর্ষার সময় বিলের পানি বাড়লে ঢেউয়ের তোড়ে বিগত বছরগুলোতে সড়কের কিছু অংশের ব্লক খুলে পড়ত। পানি কমে গেলে সেগুলো আবার কর্তৃপক্ষ ঠিক করে দিত। কিন্তু এবার বিলের পানি খুব বেশি ফুলে-ফেঁপে উঠেছে। ফলে বেশ কিছুদিন ধরেই বিলের মাঝে সড়কের অংশটুকু ভাঙছিল। এক সপ্তাহ ধরে ভাঙন বৃদ্ধি পেয়েছে।
হাঁসাইগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, নওগাঁর পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ছয়টি ইউনিয়নের দেড় লক্ষাধিক মানুষের চলাচলের সংক্ষিপ্ততম পথ এটি। এক মাস ধরে সড়ক ঢেউয়ের তোড়ে ভাঙছে। সড়কটি রক্ষায় প্রশাসনের সঙ্গে অনেক যোগাযোগ করা হয়েছে। প্রথম দিকে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। এখন সড়কটি প্রায় বিলীন হওয়ার পথে। গত শুক্রবার স্থানীয় সাংসদ ও প্রশাসনের লোকজন সড়কটি পরিদর্শন করে যান। দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে গেছেন তাঁরা।
নওগাঁ জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মাকসুদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত শুক্রবার স্থানীয় সাংসদ ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দিন জলিলসহ আমরা সড়কটির ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলো পরিদর্শন করেছি। ভাঙন ঠেকাতে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে দু-এক দিনের মধ্যে বালুর বস্তা ফেলা হবে। বালুর বস্তা ফেলা হলে রাস্তাটি দিয়ে গাড়ি চলাচলের জন্য আবারও অনুমতি দেওয়া হবে।’ তিনি আরও বলেন, ভাঙনকবলিত রাস্তাটি সংস্কারে একটি প্রকল্পের প্রস্তাব ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তা হওয়ায় খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এটি সংস্কার করা হবে বলেও জানান তিনি।