ভাবি-ভাগনে, সাংসদ-এসপিসহ ১৮ জনের নামে ‘জনতার আদালতে’ কাদের মির্জার জিডি
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে তাঁদের বিরুদ্ধে ‘জনতার আদালতে’ সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার কথা জানিয়েছেন। এক ফেসবুক পোস্টে এ কথা লিখে তিনি ওই ১৮ জনকে তাঁকে হত্যা ও নেতা-কর্মীশূন্য করার ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে দাবি করেছেন।
তালিকায় যাঁদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সহধর্মিণী ইসরাতুন্নেসা কাদের (কাদের মির্জার ভাবি), ফেনী-২ (সদর) আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী, নোয়াখালী-৪ (সদর ও সুবর্ণচর) আসনের সাংসদ মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী এবং নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম রয়েছেন।
আজ বুধবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আবদুল কাদের মির্জা তাঁর ফেসবুক পেজে এ পোস্ট করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমাকে হত্যা ও নেতা-কর্মীশূন্য করার জন্য যাঁরা নীলনকশা এঁকেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে জনতার আদালতে জিডি করলাম।’
কাদের মির্জার অভিযোগ ভিত্তিহীন। বরং কোম্পানীগঞ্জের গত এক বছর অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মূল নায়ক তিনি। প্রশাসনের কর্মকর্তারা যখন ওনার অন্যায় আবদার, মানসিকতাকে সাপোর্ট দিচ্ছে না; তখনই এসপি, ইউএনও, ওসির বিরুদ্ধে তিনি বিষোদ্গার শুরু করছেন।
এ ছাড়া অন্য যাঁদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁরা হলেন ফখরুল ইসলাম ওরফে রাহাত (ভাগনে), খিজির হায়াত (উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি), মিজানুর রহমান ওরফে বাদল (উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক), আজম পাশা ওরফে রুমেল (উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান), সিরাজিস সালেকিন ওরফে রিমন (ভাগনে ও রামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান), কানা আবদুর রেজ্জাক (চর এলাহীর চেয়ারম্যান), জাহেদুল হক ওরফে কচি (চর ফকিরার চেয়ারম্যান), হানিফ সবুজ (চর কাঁকড়ার চেয়ারম্যান), নজরুল ইসলাম ওরফে শাহিন (মুছাপুরের সাবেক চেয়ারম্যান), আজ্জুমান পারভীন (উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান), শহীদুল হক (এসপি, নোয়াখালী), জিয়াউল হক মীর (ইউএনও, কোম্পানীগঞ্জ), সাজ্জাদ রোমন (ওসি, কোম্পানীগঞ্জ), দিদারুল কবির ওরফে রতন ও জাহাঙ্গীর (মন্ত্রীর সহকারী)।
এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রীর ভাগনে রামপুর ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান সিরাজিস সালেকিন প্রথম আলোকে বলেন, কাদের মির্জার অভিযোগ ভিত্তিহীন। বরং কোম্পানীগঞ্জের গত এক বছর অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মূল নায়ক তিনি। কোম্পানীগঞ্জে যখন কাদের মির্জার ফ্যাসিবাদী রাজনীতি ও লুটপাটের রাজনীতি বন্ধ হতে যাচ্ছে, এটা বুঝতে পেরে তিনি কূটচাল শুরু করেছেন। প্রশাসনের কর্মকর্তারা যখন ওনার অন্যায় আবদার, মানসিকতাকে সাপোর্ট দিচ্ছে না; তখনই এসপি, ইউএনও, ওসির বিরুদ্ধে তিনি বিষোদ্গার শুরু করছেন। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে বিষোদ্গারই এখন তাঁর মূল হাতিয়ার।
কাদের মির্জা তাঁর ফেসবুক পোস্টে আরও লেখেন, ‘বিচারপতির কাছে বিচার চেয়েছি, বিচার পাইনি। তাই বিচারপতির বিচার করে যেই জনতা, বিচার দিলাম সেই জনতার কাছে। যে জনগণ আমার প্রাণশক্তি, সেই জনগণ আমাকে প্রেরণা জোগাবেন। সত্যের যে প্রদীপশিখা জ্বালিয়েছি, রাজভয়-লোকভয় তা কখনোই নেভাতে পারবে না।’