ভারত থেকে আসা করোনায় আক্রান্ত তিনজনের করোনা নেগেটিভ

যশোর জেলার মানচিত্র

ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে অবৈধ পথে দেশে আসা তিনজন করোনামুক্ত হয়েছেন। গতকাল রোববার যশোর ল্যাব থেকে আসা তাঁদের দ্বিতীয় দফা নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট করোনা নেগেটিভ এসেছে। এদিকে যশোর ল্যাবে তাঁদের করোনার নতুন ভারতীয় ধরন পরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠানো হলেও করোনাভাইরাসের উপস্থিতি না মেলায় সেই পরীক্ষা করা যায়নি।

এই তিনজন বর্তমানে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন। তাঁদের দুজনের বাড়ি নাটোর ও একজনের বাড়ি বরিশাল। গত শুক্রবার তাঁদের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে।

যশোর বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আসা ১৬৭ জনকে ঝিনাইদহে জেলা প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণকেন্দ্র ও এইড ফাউন্ডেশনের আবাসিক ভবনে রাখা হয়েছে। আর মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে আসা ২৭ জন ও তাঁদের দেশে আসতে সহায়তাকারী একজনকে জেলা শহরের আজাদ রেস্টহাউসে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে তিনজন কোভিড পজিটিভ হওয়ায় চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আদালতের নির্দেশে তাঁদের ঝিনাইদহ শহরের আজাদ রেস্টহাউসে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। শুক্রবার ঈদের দিন এই ২৮ জনের করোনা পরীক্ষার প্রতিবেদন আসে।

বিজিবির মহেশপুর খালিশপুর ৫৮ ব্যাটালিয়ন সূত্রে জানা যায়, ১০ মে মহেশপুর সীমান্তের মাটিলা ও সামান্তা এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় ২৭ জন এবং তাঁদের দেশে আসতে সহায়তাকারী একজনকে আটক করে তারা। পরে তাঁদের থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পুলিশ তাঁদের আদালতে পাঠালে আদালত কোয়ারেন্টিনে রাখার নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে তাঁদের ঝিনাইদহ শহরের আজাদ রেস্টহাউসে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। পরে তাঁদের করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে কুষ্টিয়া ল্যাবে পাঠানো হয়। শুক্রবার ঈদের দিন এই ২৮ জনের করোনা পরীক্ষার প্রতিবেদন আসে। অন্যরা নেগেটিভ হলেও তিনজনের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে।

এদিকে ঈদের দিনই আজাদ রেস্টহাউসে কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে থেকে তিনজন জানালার গ্রিল ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। স্থানীয় ব্যক্তিরা তাঁদের ধরে পুলিশে দেন। ওই তিনজনের মধ্যে একজন করোনা পজিটিভ রয়েছেন।

ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন সেলিনা বেগম বলেন, ‘ভারত থেকে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়ার পর তাঁরা করোনার ভারতীয় নতুন ধরনে আক্রান্ত কি না, তা পরীক্ষার জন্য নমুনা যশোর ল্যাবে পাঠানো হয়। রোববার ওই রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। ফলে করোনার ভারতীয় ধরন পরীক্ষা করা যায়নি। ভারত থেকে আসার পঞ্চম দিনে রিপোর্ট (কুষ্টিয়া ল্যাব) পজিটিভ এলেও সপ্তম দিনে (যশোর ল্যাব) নেগেটিভ এসেছে। এটা আমাদের জন্য ভালো খবর। তবে তাঁরা আপাতত হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন থাকবেন। ১৪ দিন পর আবার পরীক্ষা করে নেগেটিভ রিপোর্ট এলে ছাড়পত্র দেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, কোয়ারেন্টিন এড়ানোর জন্য তিনজন পালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পারেননি। তাঁরা আর যেন পালাতে না পারেন, সে জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।