ভারত-বাংলাদেশের রক্ত ও ত্যাগের সম্পর্ক কেউ ভাঙতে পারবে না

‘মৃত্যুঞ্জয়ী মিত্র’ ভাস্কর্যের উদ্বোধন শেষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন অতিথিরা। মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ের পাদদেশে
প্রথম আলো

ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক শুধু ইতিহাস ও সংস্কৃতির নয়, এ দুদেশের সম্পর্ক রক্তের ও ত্যাগের। কেউ সেটি ভাঙতে পারবে না।

আজ মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ের পাদদেশে নির্মিত ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মিত্র’ ভাস্কর্য উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিজয়ের আগমুহূর্তে সীতাকুণ্ডের কুমিরায় পাকিস্তানি বাহিনীর অতর্কিত হামলায় সাধারণ মানুষসহ মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর শতাধিক সদস্য শহীদ হন। মিত্রবাহিনীর অর্ধশতাধিক শহীদ সদস্যকে সীতাকুণ্ডের গজারিয়া দীঘির পাড়ে দাহ করা হয়। তাঁদের স্মরণে মৃত্যুঞ্জয়ী মিত্র ভাস্কর্যটি নির্মাণ করে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ। এতে ব্যয় হয় ২৩ লাখ টাকা।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে নির্মিত ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মিত্র’ ভাস্কর্য । বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় এখানে জীবন উৎসর্গকারী অর্ধশতাধিক ভারতীয় সেনার স্মরণে এটি নির্মাণ করা হয়েছে।
প্রথম আলো

ভাস্কর্যটির উদ্বোধন করতে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রী সঙ্গীতা দোরাইস্বামীকে সঙ্গে নিয়ে ওই এলাকায় আসেন বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জি, সেকেন্ড সেক্রেটারি দীপ্তি আলংঘাট প্রমুখ। এর কিছুক্ষণ পর ভূমি থেকে অন্তত ৩০ ফুট ওপরে নির্মিত ভাস্কর্য এলাকায় আসেন উদ্বোধক আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাংসদ মোশাররফ হোসেন।

ভাস্কর্য উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনায় সভায় অংশ নেন অতিথিরা। অনুষ্ঠানের শুরুতে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী সাব্বির ইকবালের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন সীতাকুণ্ডের সাংসদ দিদারুল আলম।

‘মৃত্যুঞ্জয়ী মিত্র’ ভাস্কর্যের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথিরা। আজ মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ের পাদদেশে
প্রথম আলো

প্রধান অতিথি বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যে বন্ধুত্ব, তা পৃথিবীর আর কোথাও নেই। কেউ বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে থামাতে পারবে না। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তাঁর বাবাও মিত্রবাহিনীর পাইলট ছিলেন। সে জন্য তাঁরও গর্ববোধ হয়।

অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণা করে সাংসদ মোশাররফ হোসেন বলেন, মৃত্যুঞ্জয়ী মিত্র ভাস্কর্যটি নির্মাণের দরকার ছিল মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের। তিনি নিজেও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) সদস্য হয়েও এ ভাস্কর্য নির্মাণে ব্যর্থ হয়েছেন। তাঁদের কাজ জেলা পরিষদ উদ্যোগ নিয়ে করায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে অর্ধশতাধিক ভারতীয় সেনার স্মরণে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মিত্র’র উদ্বোধন মঙ্গলবার