ভাসানচরে পৌঁছাল প্রায় ২ হাজার রোহিঙ্গা

চট্টগ্রাম বোট ক্লাব থেকে নৌবাহিনীর পাঁচটি জাহাজে করে রোহিঙ্গা দলটি ভাসানচরে যায়
ছবি: জুয়েল শীল

চতুর্থ দফায় প্রায় ২ হাজার রোহিঙ্গা নোয়াখালীর ভাসানচরে পৌঁছেছেন। আজ সোমবার দুপুরের দিকে রোহিঙ্গাদের এই দলটি ভাসানচরে পৌঁছায়।

এই দলটিতে ২ হাজার ১০ জন রোহিঙ্গা রয়েছেন। ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের আজকের প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত সূত্র প্রথম আলোকে এই তথ্য জানিয়েছে।

আজ সকাল ১০টার দিকে চট্টগ্রাম বোট ক্লাব থেকে নৌবাহিনীর পাঁচটি জাহাজে করে রোহিঙ্গা দলটি ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা দেয়। বেলা দেড়টার দিকে রোহিঙ্গা দলটি ভাসানচরে পৌঁছায়।

ভাসানচরে যাওয়ার জন্য আজ সকাল ৬টা থেকে এই রোহিঙ্গা দলের সদস্যরা নৌবাহিনীর জাহাজে উঠতে শুরু করে। সকাল ১০টার আগেই সব প্রস্তুতি শেষ হয়।

ভাসানচরে যাওয়া আজকের রোহিঙ্গা দলে আবদুর রহিম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ছয় সদস্যের পরিবার। কক্সবাজারের শিবিরে তাঁরা কষ্টে দিন কাটাচ্ছিলেন। যাঁরা ইতিমধ্যে ভাসানচরে গেছেন, তাঁদের কাছ থেকে সেখানকার পরিবেশ সম্পর্কে তাঁরা জেনেছেন। ভালো থাকার জন্য নিজেদের ইচ্ছায় তাঁরা ভাসানচরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরের উদ্দেশ্যে গতকাল রোববারই কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম পৌঁছান এই রোহিঙ্গারা।

গতকাল দুপুর সোয়া ১২টার দিকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠ থেকে প্রথম দফায় ২২টি গাড়িতে ১ হাজার ১৫২ জনকে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়।

বেলা সোয়া তিনটায় দ্বিতীয় দফায় ১৭টি গাড়িতে চট্টগ্রাম পাঠানো হয় আরও ৮৬২ জনকে।

আজ আরও দেড় হাজার জনকে চট্টগ্রামে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।

চতুর্থ দফায় কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের আশ্রয়শিবির থেকে ৩ হাজার ৬০০ জনের ভাসানচর যাওয়ার কথা।

অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয় সূত্র জানায়, এর আগে তিন দফায় কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে ৬ হাজার ৬৮৮ জনকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়।

২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর প্রথম দফায় স্থানান্তর করা হয় ১ হাজার ৬৪২ জনকে। ২৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় ১ হাজার ৮০৪ জনকে স্থানান্তর করা হয়। আর চলতি বছরের ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় দফায় স্থানান্তর করা হয় ৩ হাজার ২৪২ জনকে।

ভাসানচরের আশ্রয়শিবিরে মোট এক লাখ রোহিঙ্গাকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা আছে সরকারের।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতা শুরু হলে পরের কয়েক মাসে অন্তত আট লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। এর আগে আসেন আরও কয়েক লাখ। বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১১ লাখ।