ভিক্ষা ছেড়ে সরকারি কারখানায় চাকরি ৪৩ জনের

নিয়োগপত্র তুলে দেন জেলা প্রশাসক সাহিদা সুলতানা। আজ শনিবার গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার চৌরখুলী গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দেওয়া ৪৩ জন চাকরিতে যোগদান করেছেন। তাঁরা উপজেলার কুশলা ইউনিয়নের চৌরখুলী গ্রামে নির্মিত সরকারি প্যাকেজিং কারখানায় কাজ করবেন।

শনিবার দুপুরে প্যাকেজিং কারখানায় যোগদান অনুষ্ঠান হয়। এ সময় ওই ৪৩ জনের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা। এর আগে তিনি ফিতা কেটে ‘অবলম্বন’ নামের কারখানাটি উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মাহফুজুর রহমান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মহসীন উদ্দিন, পৌর মেয়র কামাল হোসেন শেখ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ, কুশলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা শ্রীময়ী বাগচী প্রমুখ।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, চৌরখুলী গ্রামের ৪৩ জন নারী-পুরুষ দীর্ঘদিন ধরে ভিক্ষাবৃত্তিতে জড়িত ছিলেন। নানা উদ্যোগ নিলেও তাঁদের এ পেশা থেকে নিবৃত্ত করা যায়নি। এ অবস্থায় তাঁদের কর্মসংস্থানের জন্য বিকল্প চিন্তা শুরু হয়। এর অংশ হিসেবে ‘অবলম্বন’ নামের এই প্যাকেজিং কারখানা নির্মাণের উদ্যোগ নেয় কোটালীপাড়া উপজেলা প্রশাসন। সরকারি অর্থায়নে গত ডিসেম্বর মাসে কারখানার নির্মাণকাজ শুরু হয়। চলতি মাসের শুরুতে নির্মাণকাজ শেষ হয়। কারখানায় চাকরি দেওয়ার কথা বললে ওই ৪৩ জন ভিক্ষাবৃত্তি ছাড়তে রাজি হন। সরকারিভাবে তাঁদের ২০ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কারখানা থেকে ওই ৪৩ জন মাসে ৩ হাজার টাকা করে বেতন পাবেন। এ ছাড়া কারখানায় উৎপাদিত কাগজের তৈরি প্যাকেট বিক্রির লভ্যাংশের ২০ শতাংশ তাঁদের দেওয়া হবে।

ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে চাকরিতে যোগ দেওয়া সোনামতি বেগম, রেখা বেগম, ডালিম বেগম বলেন, এত দিন কোনো কাজ পাননি বলে ভিক্ষা করেছেন তাঁরা। এখন এই কারখানায় চাকরি করে সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে চান।

ইউএনও এস এম মাহফুজুর রহমান বলেন, ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনের এই উদ্যোগ সফল হলে পরিবর্তন আসবে চৌরখুলী গ্রামের; পরিবর্তন হবে কোটালীপাড়া উপজেলারও। এভাবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরিবর্তনের মধ্যে দিয়েই একদিন উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে।