‘ভুলেও কাইয়ো বাল্যবিয়া দেন না’

কুড়িগ্রামের প্রথম আলো চর আলোর পাঠশালা মাঠে বাল্যবিবাহবিরোধী পথনাটক মঞ্চস্থ হয়েছে
ছবি: প্রথম আলো

‘তোমরা ভুলেও কাইয়ো বাল্যবিয়া দেন না বাহে। তা হইলে মোর মতো পস্তা নাগবে।’ এমন সংলাপই উচ্চারিত হয়েছে কুড়িগ্রামের প্রথম আলো চর আলোর পাঠশালা মাঠে পথনাটক মঞ্চে। বাল্যবিবাহ রোধে নাটকটির আয়োজন করেন বিল্ডিং বেটার ফিউচার ফর গার্লসের (বিবিএফজি) যুব ফোরামের সদস্যরা। নাটকটির নাম ‘সর্বনাশা বাল্যবিয়ে’।

আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থী ও চরবাসীদের উপস্থিতিতে শুক্রবার সকালে নাটকের উদ্বোধন করেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক সদস্য ও মোহামেডান ক্লাবের সাবেক ফুটবলার কহিনুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র আবু বক্কর সিদ্দিক, সাবেক সাবরেজিস্ট্রার এ কে এম মোস্তাফিজার রহমান, বিল্ডিং বেটার ফর ফিউচার ফর গার্লস সমন্বয়ক আল মামুন, স্থানীয় বাসিন্দা ফজলার রহমান, আবদুর সোবহান ব্যাপারী, মজিবর রহমান, সহিদুল ইসলাম, আলোর পাঠশালার প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান, প্রথম আলো কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি সফি খান।

বাল্যবিবাহ বিষয়ে সচেতনতামূলক পথনাটক মঞ্চস্থ হয়েছে কুড়িগ্রাম প্রথম আলো চর আলোর পাঠশালা মাঠে
ছবি: প্রথম আলো

নাটকের পরিচালক ও অভিনেতা জীবন কুমার সেন বলেন, ‘বিল্ডিং বেটার ফর ফিউচার ফর গার্লসের ব্যানারে আমরা বিভিন্ন স্থানে নাটকের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করি। জেলায় বাল্যবিবাহ রোধে আমরা কাজ করছি।’

যুব ফোরামের সদস্য তানজিনা ইসলাম বলেন, ‘আশপাশে বাল্যবিবাহ দেখে ক্ষোভ জাগে, যদি কিছু করতে পরতাম। সেই সুযোগ করে দিয়েছে আরডিআরএস বাংলাদেশের এই প্রকল্প। ২০টি স্থানে নাটকটি মঞ্চস্থ হয়েছে। আমাদের অভিনয় দেখে মানুষকে কাঁদতে দেখেছি। মানুষ সচেতন হচ্ছে। এটাই প্রাপ্তি।’

জেলায় ৭৩টি যুব ফোরাম বাল্যবিবাহ রোধে গ্রামে গ্রামে সচেতনতামূলক কাজ করছে বলে জানালেন ফোরামের প্রকল্প সমন্বয়কারী আবদুল্ল্যা আল মামুন। নাটক দেখে প্রথম আলো চরের বাসিন্দা আবদুর সোবহান বলেন, ‘বাচ্চা গুইলার নাটক দেখি মনটা ভরি গেইল। অনেক কিছু শিখলাম। চরে বাল্যবিয়া বেশি। সউগ জাগাত নাটক করা দরকার।’
আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, কুড়িগ্রামে বাল্যবিবাহের হার অনেক বেশি ছিল। এসব সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কিছুটা কমছে। প্রথম আলো চর ও আলোর পাঠশালায় এসে নাটকটি দেখে ভালো লাগল। মনে হচ্ছে এখানে আগে কেন আসা হয়নি।

কহিনুর রহমান বলেন, ‘চরের নামটি সুদূর আমেরিকা থেকে অনেক দিন আগেই শুনেছি। দেখার ইচ্ছা ছিল। চর ও আলোর পাঠশালাটি খুব ভালো লেগেছে। বাচ্চারা নাটকটি অসাধারণ পরিবেশন করেছে। ধন্যবাদ জানাই সবাইকে।’