ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে কলেজছাত্রীর সঙ্গে বন্ধুত্ব, অতঃপর...

গ্যাস সিলিন্ডার দোকানে বাবার সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন তিনি। বিবাহিত ও এক সন্তানের বাবা। এসব পরিচয় গোপন করে নিজেকে ব্যবসায়ী ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিচয় দিয়ে খোলেন ভুয়া ফেসবুক আইডি। এই আইডির মাধ্যমে একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১৫) বন্ধুত্বের অনুরোধ পাঠান তিনি। ছাত্রীটি তা গ্রহণও করে। অনলাইনে দুজনের মধ্যে চলে কথাবার্তা। একপর্যায়ে দেখা করতে গিয়েই কলেজছাত্রী বুঝতে পারল বড় ফাঁদে পড়েছে সে।

সাক্ষাতের কথা বলে কলেজছাত্রীকে অপহরণ করে নিয়ে যান ফেসবুকের সেই পাতানো বন্ধু। পরিবারের কাছে দাবি করা হয় পাঁচ লাখ টাকার মুক্তিপণ। পরে পুলিশ গতকাল মঙ্গলবার ভোরে ঢাকার দারুস সালাম এলাকা থেকে অপহৃত ওই ছাত্রীকে উদ্ধার এবং ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। অপহরণকারী সেই কথিত বন্ধুর নাম সাইদুল ইসলাম (২৬)। তিনি সাভারের হেমায়েতপুরের মো. সোবহানের ছেলে। গত ২৯ মে চট্টগ্রাম নগরের আকবর শাহ থানার কর্নেল হাট এলাকা থেকে ছাত্রীটিকে অপহরণ করা হয়। এই ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে আকবর শাহ থানায় মামলা করেন।

ছাত্রীর মা প্রথম আলোকে বলেন, ২৯ মে বাসা থেকে বের হওয়ার পর মেয়ের আর খোঁজ পাচ্ছিলেন না তিনি। একপর্যায়ে থানায় মামলা করেন। ইতিমধ্যে একটি নম্বর থেকে মুক্তিপণ হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা হয়। নয়তো তার মেয়েকে বিক্রি করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। পরে পাঁচ লাখ টাকা থেকে নেমে এক লাখ টাকায় রাজি হয় অপহরণকারীরা। বিকাশের মাধ্যমে ১৫ হাজার টাকা পাঠানোও হয়।

আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকার দারুস সালাম থানার গাবতলী আবাসিক হোটেল থেকে সাইদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিকে ওই কলেজছাত্রীকে সেখান থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। অপহরণকারী ভুয়া পরিচয় দিয়ে ফেসবুক আইডি খোলেন। গ্রেপ্তারের পর ছাত্রীটির সঙ্গে প্রতারণার কথা স্বীকার করেন সাইদুল। তাঁর কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে মুক্তিপণ হিসেবে নেওয়া ১৫ হাজার টাকার মধ্যে ৯ হাজার ৯৫৬ টাকা উদ্ধার করা হয়।

পরিচয় নিশ্চিত না হয়ে ফেসবুকে পাঠানো অনুরোধ গ্রহণে সতর্ক থাকার জন্য নগরবাসীকে আহবান জানান পুলিশ কর্মকর্তা জহির হোসেন। তিনি বলেন, অপরিচিত কারও সঙ্গে সাক্ষাতেও সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।