ভৈরবে মজুত শেষ, করোনার টিকাদান কর্মসূচি স্থগিত

করোনার টিকা
ছবি : রয়টার্স

টিকার মজুত শেষ হওয়ায় আজ বুধবার থেকে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে দ্বিতীয় ডোজের টিকাদান কর্মসূচি বন্ধ হয়ে গেছে। এতে দ্বিতীয় ডোজ পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন ১ হাজার ৩০২ জন টিকাপ্রত্যাশী।

আজ সকালে ১০ জনকে টিকা দেওয়ার পর টিকাদান কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করা হয়। এ সময় প্রায় ২০-২৫ জন টিকা না পেয়ে ফিরে যান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেসকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা হতাশ হয়ে বলেন, ‘এখন আমরা কী করব? টাকা দিয়েও তো টিকা পাওয়া যাবে না। এদিকে আমার কম৴স্থল থেকে সময়মতো দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার জন্য তাগাদা দিচ্ছে।’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় প্রথম ডোজের জন্য বরাদ্দ ছিল ৯ হাজার ৫০০ ডোজ টিকা। প্রথম ডোজ পেতে ১২ হাজার ১৫৬ জন নিবন্ধন করেছিলেন। নিবন্ধনের বিপরীতে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৮ হাজার ৩১ জন। অন্যদিকে আজ পর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৬ হাজার ৭২৯ জন। প্রথম ডোজ পাওয়া ব্যক্তিদের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়া হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, দ্বিতীয় ডোজে ওই একই কোম্পানির টিকাই গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশে এই মুহূর্তে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার সরবরাহ নেই। এদিকে দুই-এক দিনের মধ্যে কিশোরগঞ্জ জেলার জন্য সিনোফার্মের ২৭ হাজার ৬০০ ডোজ টিকা পাঠানো হবে। তবে এক কোম্পানির না হওয়ায় এই টিকা দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, করোনার জন্য কিশোরগঞ্জ শুরু থেকেই হটস্পট জেলা। জেলার ১৩ উপজেলার মধ্যে শুরু থেকেই ভৈরব স্পর্শকাতর স্থান হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। ভৈরবে এখন পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ৭ হাজার ৩০৯ জনের। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ১২২ জনের। সংক্রমণের হার ১৭ শতাংশ। জেলায় করোনায় মোট মারা গেছেন ২১ জন। তবে এক সপ্তাহ ধরে ভৈরবের সংক্রমণ পরিস্থিতি কিছুটা নিম্নমুখী। গেল ২৪ ঘণ্টায় ১৯টি নমুনা থেকে একজনের সংক্রমণ পাওয়া গেছে। বর্তমানে এই উপজেলায় ৯ জন করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি রয়েছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্যসচিব খোরশেদ আলম জানান, দ্বিতীয় ডোজের সমাধান কেবল অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা। কিন্তু এখন দেশে টিকার সরবরাহ নেই। কবে আসবে, তা–ও জানা নেই। অথচ প্রথম ডোজ টিকা নেওয়া অনেকেরই দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার সময় হয়ে গেছে।

সমাধান পেতে অপেক্ষার সময় কতটা দীর্ঘ হতে পারে—এমন প্রশ্নের জবাবে কিশোরগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন মো. মজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দিনক্ষণ ঠিক করে বলা কঠিন। তবে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পাওয়ার চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া প্রথম ডোজ নেওয়ার তিন মাসের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারলে কোনো সমস্যা হবে না। সেই হিসাবে আমাদের হাতে আরও এক মাস সময় আছে।’