ভোটকেন্দ্র দখলে অস্ত্রধারীদের ভাড়ায় নিয়ে যাওয়া সেই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার রহিম ও তার সহযোগী মোরশেদ
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের চন্দনাইশে ভোটকেন্দ্র দখলে অস্ত্রধারীদের টাকার বিনিময়ে ভাড়ায় নিয়ে যাওয়া স্বেচ্ছাসেবক লীগের সেই নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর নাম রহিম উদ্দিন। তিনি চন্দনাইশ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। গতকাল শনিবার রাতে নগরের নতুন ব্রিজ এলাকা থেকে এক সহযোগীসহ তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সহযোগীর নাম মো. মোরশেদ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা পরিদর্শক মো. নেজাম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুই অস্ত্রধারী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। সেখানে তাঁরা রহিম উদ্দিন তাঁদের ভোটকেন্দ্র দখল করতে চন্দনাইশে নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন। জবানবন্দিতে নাম উঠে আসায় রহিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজ রোববার দুপুরে আদালতে হাজির করা হবে।

আরও পড়ুন

গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি চন্দনাইশ পৌরসভা নির্বাচনে গাছবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে দুপুরে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবদুর রহিম ও আওয়ামী লীগ–সমর্থক মো. সেলিম নামের দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের একপর্যায়ে গোলাগুলি হয়। কেন্দ্রের পাশে ছিলেন গাছবাড়িয়া সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র হাবিবুর ইসলাম। গুলিতে তিনি গুরুতর আহত হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় তাঁর মা ছকিনা খাতুন বাদী হয়ে মামলা করেন চন্দনাইশ থানায়। আদালতের নির্দেশে মামলাটি পিবিআইতে আসে।

পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার উপপরিদর্শক (এসআই) ও তদন্ত কর্মকর্তা শফিউল আলম বলেন, তিন অস্ত্রধারীকে গ্রেপ্তারের পর চন্দনাইশে তাঁদের গুলিতে হাবিবুর ইসলাম নামের ওই তরুণ নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করেন। গত বুধবার রাতে তিন অস্ত্রধারীকে নগরের লালদীঘি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। তারা হলেন কামরুল আজাদ ওরফে সুমন (৩১), শওকত হোসেন (৩২) ও আজাহার উদ্দিন (৩২)। তবে ভোটের দিন প্রদর্শন করা এই তিনজনের অস্ত্র উদ্ধার করা যায়নি।

পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার তিন আসামির মধ্যে কামরুল বৃহস্পতিবার ও শওকত শুক্রবার জবানবন্দি দেন আদালতে। সেখানে তাঁরা চন্দনাইশ পৌরসভা নির্বাচনে তাঁদের নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন। ভোটের আগের দিন রাতে তাঁরা রহিমের বাসায় ছিলেন। রহিম অস্ত্রসহ তাঁদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে এবং অস্ত্র ছাড়া ১০ হাজার টাকা করে দেন। সেদিন তারা ৪০ জন গিয়েছিলেন। রহিমের চাচাতো ভাই মোরশেদ চক্রটির সঙ্গে তাঁর পরিচয় করিয়ে দেন।

নাজমুল হাসান আরও বলেন, জবানবন্দিতে জড়িত আরও অনেকের নাম বেরিয়ে আসছে। তাঁদের আইনের আওতায় আনার হবে।

জানতে চাইলে গ্রেপ্তারের আগে গত শুক্রবার দুপুরে চন্দনাইশ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও নির্বাচনের প্রার্থী রহিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ভাড়ায় কাউকে আনিনি। সব অপপ্রচার।’