ভোটারদের চাওয়া শহরের জলাবদ্ধতার সমাধান

দুই পৌরসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে ১৬ জানুয়ারি। মেয়র পদে পৌরসভা দুটি মিলিয়ে প্রার্থীর সংখ্যা ১৫।

পৌরসভা নির্বাচন
প্রতীকী ছবি

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনের প্রচারণা এখন তুঙ্গে। রাস্তার মোড়, ভবনের দেয়ালগুলো মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের পোস্টারে ছেয়ে গেছে। প্রার্থীরাও এলাকা ঘুরে ঘুরে ভোট চেয়ে ভোটারদের নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। ভোটাররা বলছেন, তাঁরা শহরের উন্নয়ন ও জলাবদ্ধতার সমাধান চান। এসব সমস্যা সমাধানে যে প্রার্থীর প্রতিশ্রুতি বিশেষ মনে হবে, তাঁকেই ভোট দেবেন তাঁরা।

১৬ জানুয়ারি এই দুই পৌরসভার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। গাইবান্ধা পৌরসভায় মেয়র পদে আটজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবির, বিএনপির শহিদুজ্জামান, আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মতলুবর রহমান, ফারুক আহমেদ। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ব্যবসায়ী আনোয়ারুল সারওয়ার, সাবেক মেয়র শামসুল আলম ও ঠিকাদার মির্জা হাসানও মেয়র পদের নির্বাচনে লড়বেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী মতলুবর রহমান বলেন, বন্যা, করোনাকালে অসহায় মানুষের পাশে থেকেছেন তিনি। এ জন্য তাঁর জনপ্রিয়তা আছে। নির্বাচনে সুষ্ঠু জয় পাওয়ার আশা করছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবির বলেন, সরকার দলের হওয়ায় উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা তাঁর জন্য সুবিধাজনক হবে। এ কথা বিবেচনা করে ভোটাররা তাঁকেই অগ্রাধিকার দিতে পারেন। আর বিএনপির প্রার্থী শহিদুজ্জামান সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনী পরিবেশ কামনা করেন।

প্রচারণার সময় নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন সুন্দরগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনের মেয়র পদের প্রার্থীরাও। এ পৌরসভায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাতজন।

এদিকে ভোট দেওয়া নিয়েও নানা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ভোটাররা। ১ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার দিপু হাসান (২২) বলেন, তিনি এবারই প্রথম ভোট দেবেন। তাই যোগ্য প্রার্থীকেই ভোটটি দিতে চান। কোন মাপকাঠিতে যোগ্য প্রার্থীকে ঠিক করবেন, তা জানতে চাইলে ২ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার আশরাফুল হক (৫০) বলেন, ঢাকা-রংপুর জাতীয় মহাসড়ক থেকে জেলা শহরের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। ফলে এটি পকেট শহরে পরিণত হয়েছে। শহরের তেমন একটা উন্নয়নও হয়নি। যিনি মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী শহর গড়ে তোলার অঙ্গীকার করবেন, তাঁকেই ভোট দেবেন।

তবে প্রার্থীদের অঙ্গীকার বা প্রতিশ্রুতি নিয়ে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার কাশেম মিয়া (৬০) আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, ‘ভোটের আগোত সগলে খালি মিঠা মিঠা কতা কয়, ঘন ঘন বাড়িত আসে। ভোট গেলে তামরা হামাক চেনে না। এলাকার উন্নয়নও করে না।’

প্রচারণার সময় নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন সুন্দরগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনের মেয়র পদের প্রার্থীরাও। এ পৌরসভায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাতজন। আওয়ামী লীগ সমর্থিত ও বর্তমান মেয়র আব্দুল্যাহ-আল-মামুন, বিএনপির আবু খায়ের মো. মশিউর রহমান, জাতীয় পার্টির আবদুর রশিদ রেজা সরকার, আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী খয়বর হাসেন মওলা, দেবাশীষ কুমার সাহা, জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আহসান হাবিব ও আল শাহাদত জামান।

সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণের সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবেন।
আল মারুফ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা

পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার আজিজল হক (৪৫) বলেন, গত পাঁচ বছরে কোনো উন্নয়ন হয়নি। পৌরসভার বেশির ভাগ অংশ গ্রামাঞ্চলের মতো রয়ে গেছে। পরিকল্পিতভাবে শহর গড়ে ওঠেনি। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার মোশারফ হোসেন (৫৫) বলেন, পৌরসভায় কয়েক কিলোমিটার নর্দমা নির্মাণের কাজ চলছিল, এটিও তিন বছর ধরে বন্ধ আছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। একই ওয়ার্ডের ভোটার তাহমিনা খাতুনের (২৩) মতে, এখনই প্রার্থীদের দোষ–গুণ যাচাই-বাছাই করার সময়। আর ভোট গ্রহণও হতে হবে সুষ্ঠু পরিবেশে।

এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল মারুফ বলেন, সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণের সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবেন।