টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার অরণখোলা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। সেই সঙ্গে ‘নৌকায় যাঁরা ভোট দিতে নারাজ, দয়া করে কেন্দ্রে আসবেন না’ বলে হুমকি দেওয়া আওয়ামী লীগ নেতা সাদিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সাদিকুল ইসলাম মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মির্জাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন পরিচালনা-২ অধিশাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এ–সংক্রান্ত দুটি চিঠি রোববার রাতে টাঙ্গাইল জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং মধুপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে ই-মেইলে পাঠানো হয়েছে।
টাঙ্গাইল জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এ এইচ এম কামরুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, চিঠি পাওয়ার পর মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। রোববার রাতেই মধুপুর থানায় অভিযোগ দেওয়া হবে।
১৫ জুন (বুধবার) অরণখোলা ইউপি নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল।
৮ জুন অরণখোলা ইউনিয়নের আমলিতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবদুর রহিমের নির্বাচনী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বক্তব্য দেওয়ার সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মির্জাবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান সাদিকুল ইসলাম নৌকা মার্কায় যাঁরা ভোট দেবেন না, তাঁদের ভোটকেন্দ্রে না আসার হুমকি দেন। তাঁর এ বক্তব্য গত শুক্রবার প্রথম আলোসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ হুমকি দিয়ে বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হয়।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, সাদিকুল ইসলাম বক্তৃতায় বলছেন, ‘আমি আজকেও বলে দিতে চাই, ১৫ তারিখ ভোট হবে সারা দিন এবং নৌকা মার্কায় ভোট হবে। আপনারা ভোট দেবেন। যাঁরা নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন, তাঁরাই কেন্দ্রে আসবেন। আর যাঁরা নৌকায় ভোট দিতে নারাজ, দয়া করে কেন্দ্রে আসবেন না। আমরা কিন্তু আশপাশেই অবস্থান করব। এখানে ২৪ শ ভোট রয়েছে, যদি দুই হাজার ভোট কাস্ট হয়, আমরা দুই হাজার ভোটই পেতে চাই।’
নির্বাচন কমিশনের উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ওই বক্তব্যে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আচরণ বিধিমালা ২০১৬, স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) নির্বাচন বিধিমালা ২০১০ এবং দণ্ডবিধি অনুযায়ী অপরাধ হয়েছে। তাই সাদিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে।