ভোটের দিনের পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কায় ঠাকুরগাঁওয়ের ভোটাররা

পৌরসভা নির্বাচন
প্রতীকী ছবি

শুক্রবার সকাল সোয়া ৯টা। ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের মুন্সিপাড়ার একটি চায়ের দোকানে স্থানীয়দের আড্ডা চলছিল। কয়েকজন বাসিন্দা কথা বলছিলেন ১৪ ফেব্রুয়ারির ভোট নিয়ে। তবে সরাসরি ভোটের পরিস্থিতি জানতে চাইলেই কিছুটা অস্বস্তিতে পড়লেন তাঁরা। কিছুক্ষণ পর দোকানি বললেন, এসব নিয়ে কথা বলে আর কী হবে!

ওই দোকান থেকে বেরিয়ে পৌর শহরের আশ্রমপাড়া, কালীবাড়ি, হাজীপাড়া, গোয়ালপাড়া, কলেজপাড়া ও বিসিক শিল্পনগরী এলাকা ঘুরে ভোটের পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয় কয়েকজন ভোটারের সঙ্গে। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের খালপাড়া এলাকায় সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে রোদ পোহাচ্ছিলেন এক বৃদ্ধ (৬২)। তিনিও বললেন, এ নিয়ে আলোচনা করে লাভ কী? সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তো দেখা যাচ্ছে না। একপর্যায়ে বললেন, তাঁর নামটা যেন প্রকাশ করা না হয়। ‘জানি না কখন যে কী হয়?’

আগামীকাল রোববার ভোট গ্রহণ এই পৌরসভায়। এর এক দিন আগেও ভোট দিতে যাওয়া নিয়ে শঙ্কার কথাই বলেন ভোটাররা। কেউ কেউ বলেন, কেন্দ্রে না যেতে তাঁদের হুমকি দেওয়া হয়েছে। তাই ভোটের দিন কেন্দ্রে যাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছেন তাঁরা।

২ নম্বর ওয়ার্ডের গোয়ালপাড়া এলাকার ভোটার মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, তিনি সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট দিতে চান। কিন্তু দুই–তিন দিন ধরে এলাকায় ভোটকেন্দ্রে না যেতে প্রচারণা চলছে। এ কারণে কেন্দ্রে যাবেন কি না, তা নিয়ে ভাবছেন।

পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৬০ হাজার ৭২৭ জন। ২১টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হবে। মেয়র পদে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত (নৌকা প্রতীক) আঞ্জুমান আরা বেগম, বিএনপির (ধানের শীষ প্রতীক) শরিফুল ইসলাম এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের (হাতপাখা প্রতীক) প্রার্থী আনোয়ার হোসেন।

বিএনপির প্রার্থী শরিফুল ইসলাম বলেন, সুষ্ঠু ভোট হলে তিনিই জিতবেন। কিন্তু ফল তুলে আনতে পারবেন কি না, তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন। তাঁর অভিযোগ, প্রশাসন আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছে। এত দিন তাঁকে গণসংযোগে বাধা দেওয়া হয়েছে। বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের মাঠছাড়া করতে এখন সাজানো ঘটনার মামলায় গ্রেপ্তার চলছে।

আর আওয়ামী লীগের প্রার্থী আঞ্জুমান আরা বেগম বিএনপির প্রার্থীর অভিযোগ নাকচ করে বলেন, নির্বাচনে জেতার জন্য আওয়ামী লীগের ভয়ভীতি দেখানোর প্রয়োজন নেই। বিএনপির প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতা নেই। তাই প্রচারণা চালানোর মতো প্রয়োজনীয় লোকজন তিনি পাননি।

রিটার্নিং ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জিলহাজ উদ্দিন বলেন, ভয়ের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।