ভোলার ইলিশা ঘাট থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত লঞ্চ ছাড়বে

ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাট থেকে বেলা সাড়ে ১১টায় শেষ লঞ্চ ছেড়ে যাওয়ার পরও অসংখ্যা যাত্রী ঘাটে অপেক্ষা করতে থাকেন। ফলে বিআইডব্লিউটিএ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত লঞ্চ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ছবিটি আজ দুপুরে ইলিশা লঞ্চঘাটে তোলা
ছবি: প্রথম আলো

অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামাল দিতে ভোলার ইলিশা ফেরিঘাট থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকা, লক্ষ্মীপুরসহ বিভিন্ন জেলার উদ্দেশে লঞ্চ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় শেষ লঞ্চ ছাড়ার পরও ফেরিঘাটে কয়েক হাজার যাত্রী ঢাকায় যাওয়ার অপেক্ষায় থাকায় বিআইডব্লিটিএ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান ভোলা নদীবন্দরের উপপরিচালক মো. কামরুজ্জামান।

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গতকাল শনিবার রাত থেকে লঞ্চ ছাড়ার কথা থাকলেও ভোলার কোনো ঘাট থেকে লঞ্চ ছাড়েনি। তবে আজ ভোররাত থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ঢাকা ও লক্ষ্মীপুরের উদ্দেশে একাধিক লঞ্চ, সিট্রাক ও ফেরি-ট্রলার ছেড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এরপরও ইলিশা লঞ্চঘাটে এখনো চার থেকে পাঁচ হাজার যাত্রী অপেক্ষা করছেন বলে জানা গেছে।

ইলিশা ফেরিঘাটের ইজারাদার মো. ইউসুফ বলেন, কারখানা খুলে দেওয়ার খবর শুনে শনিবার ভোর থেকেই হাজার হাজার মানুষ ইলিশা ফেরিঘাটে ভিড় করতে শুরু করেন। এরপর কোনো লঞ্চ না পেয়ে গাদাগাদি করে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনেক মানুষ ফেরি ও অবৈধ ট্রলারে ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে যাতায়াত করেন। প্রতিটি ফেরিতে দুই হাজারের বেশি যাত্রী পার হয়েছেন। এদিকে সন্ধ্যা সাতটার দিকে লঞ্চ ও গণপরিবহন চলার খবরে ফেরিঘাটে যাত্রীদের আরেক দফা ভিড় শুরু হয় বলে জানান তিনি।

ইজারাদার ও ফেরিঘাটের যাত্রীদের কাছ থেকে জানা গেছে, রাতে কোনো লঞ্চ না ছাড়ায় ঢাকাগামী যাত্রীরা সারা রাত ফেরিঘাটেই অপেক্ষা করেন। এরপর ভোররাত থেকে ঘাট থেকে ফেরি ছাড়া ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌপথে সিট্রাক এসটি খিজির-৮, এসটি খিজির-৫, এসটি সুকান্তবাবু এবং পারিজাত নামের লঞ্চ একাধিক ট্রিপ দিয়েছে। এ ছাড়া ভোলা-ঢাকা রুটে কর্ণফুলী-১০, গ্রিন লাইন-৩, দোয়েল পাখি-১, এমভি ভোলা ও কর্ণফুলী-৪ ছেড়ে গেছে। প্রতিটি লঞ্চ ও সিট্রাকেই ধারণক্ষমতার বেশি যাত্রী ছিল বলে জানা গেছে।

রাতে ভোলার কোনো ঘাট থেকে লঞ্চ না ছাড়লেও আজ ভোররাত থেকে ফেরি ছাড়াও একাধিক লঞ্চ ছেড়ে গেছে। প্রতিটি লঞ্চেই ধারণক্ষমতার বেশি যাত্রী পরিবহন করতে দেখা গেছে
ছবি: প্রথম আলো

ভোলা-চট্টগ্রাম রুটে চলাচলকারী পরিবহনশ্রমিকেরা জানান, সরকার ঘোষণা দেওয়ার পরপরই লঞ্চ না চললেও লক্ষ্মীপুর মজু চৌধুরীর হাট ঘাট থেকে দেশের বিভিন্ন রুটের প্রায় ৮০টি যাত্রীবাহী পরিবহন ছেড়েছে। এ ছাড়া ভোলার চরফ্যাশন থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ৮–৯টি বাস ছেড়ে গেছে।
কর্ণফুলী লঞ্চের ব্যবস্থাপক মো. আলাউদ্দিন বলেন, কর্ণফুলী-৯ নামের আরেকটি লঞ্চ ঢাকা থেকে আসছে। ইলিশা ঘাটে আটকে পড়া যাত্রীদের নিয়ে এই লঞ্চের আবার ঢাকায় যাওয়ার কথা রয়েছে।

ভোলা নদীবন্দরের উপপরিচালক মো. কামরুজ্জামান বলেন, লঞ্চের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাড়ি থেকে আসতে দেরি হওয়ায় শনিবার রাতে ভোলা থেকে কোনো যাত্রীবাহী লঞ্চ ছাড়েনি। তবে আজ ভোররাত থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত লঞ্চ ছেড়েছে। তবে শেষ লঞ্চটি ছেড়ে যাওয়ার পর ঘাটে আরও অসংখ্য যাত্রী দেখে তিনি কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান। এরপর সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত লঞ্চ ছাড়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় বলে জানান তিনি।