মঙ্গল মাঝির ফেরিঘাট চালু করতে আড়াই কিমি খনন করতে হবে

রো রো ফেরির পন্টুন স্থাপন করা হয়েছে শরীয়তপুরের জাজিরার সাত্তার মাদবর মাঝির ঘাট এলাকায়
ফাইল ছবি

শিমুলিয়া-জাজিরা নৌপথে শরীয়তপুরের জাজিরার সাত্তার মাদবর মঙ্গল মাঝির ফেরিঘাট দুই মাসেও চালু করা সম্ভব হয়নি। স্রোতের কারণে এ নৌপথের বিভিন্ন স্থানে চর পড়ে নাব্যতা–সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এতে ফেরিঘাটটি চালু করা যায়নি বলে দাবি করছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি)।

এদিকে বিআইডব্লিউটিএর খনন বিভাগের প্রকৌশলীরা বলছেন, নৌপথের জাজিরা অংশের দুই থেকে আড়াই কিলোমিটার খনন করলে আবার ফেরি চালানো সম্ভব হবে।

বিআইডব্লিটিএ ও বিআইডব্লিউটিসি সূত্র জানায়, গত ১৮ আগস্ট থেকে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। তখন থেকে শরীয়তপুরসহ দেশে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন। লঞ্চ ও স্পিডবোট দিয়ে মানুষ পদ্মা নদী পার হচ্ছে।

জরুরি সেবা নিশ্চিত করতে গত ২৫ আগস্ট সাত্তার মাদবর মঙ্গল মাঝির ঘাট এলাকায় নতুন করে একটি ফেরিঘাট নির্মাণ করে বিআইডব্লিউটিসি ও বিআইডব্লিউটিএ। লঞ্চঘাট-শরীয়তপুর সড়কের মাথায় পদ্মা নদীতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে কিছু অংশ ভরাট করে সেখানে ১০০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৫০ ফুট প্রশস্ত ঘাট নির্মাণ করা হয়। এ ঘাট নির্মাণে ৪০ লাখ টাকা ব্যয় করেছে বিআইডব্লিউটিএর প্রকৌশল বিভাগ।

জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিসির সহকারী মহাব্যবস্থাপক আহম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, পদ্মা নদীতে স্রোতের কারণে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিকল্প ঘাট চালুর জন্য জাজিরার মাঝির ঘাটে ফেরির পন্টুন বসানো হয়েছে। কিন্তু নাব্যতা–সংকটে ওই ফেরিঘাটও চালু করা যায়নি। নৌপথের যেসব স্থানে চর সৃষ্টি হয়েছে, সেসব স্থানে খনন করা হলে ফেরি চালানো যাবে।

এদিকে পদ্মা সেতু প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিনোইড্রো করপোরেশনের জেটি থেকে সাত্তার মাদবর মঙ্গল মাঝির ঘাট পর্যন্ত দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদীর দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে পলি জমে পানির গভীরতা কমে গেছে। বর্তমানে ওই অংশে পানির গভীরতা রয়েছে চার–পাঁচ ফুট। ফেরি চলাচল করতে হলে পানির গভীরতা কমপক্ষে আট ফুট প্রয়োজন।

এমন পরিস্থিতিতে সাত্তার মাদবর মঙ্গল মাঝির ঘাট থেকে লঞ্চগুলো উল্টাপথে গিয়ে নদীর অপর প্রান্ত দিয়ে পদ্মা সেতুর চ্যানেলে প্রবেশ করে। এতে লঞ্চগুলোকে প্রায় দেড় কিলোমিটার ঘুরে চালাতে হচ্ছে। আবার পদ্মা সেতুর ৩৭ নম্বর পিলার থেকে ৩৯ নম্বর পিলার পর্যন্ত নাব্যতা–সংকট রয়েছে বলে জানা গেছে।

জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএর খনন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এনামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, শিমুলিয়া-জাজিরা নৌপথের অন্তত আড়াই কিলোমিটার অংশে ব্যাপক খনন করা সম্ভব হলে নাব্যতা ফিরে আসবে। তথন আর ফেরি চলাচলে কোনো বাধা থাকবে না। এখন ওই নৌপথে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রাখতে গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে পাইনপারা এলাকায় দুটি খননযন্ত্র দিয়ে খনন করা হচ্ছে। তবে ফেরি চালানোর জন্য এখনো খনন করার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।