মঠবাড়িয়ায় দুই প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ, দুজন গুলিবিদ্ধসহ আহত ৯

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার মিরুখালী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে দুজন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন নয়জন। গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার মিরুখালী ইউনিয়নের নাঙ্গাভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

গুলিবিদ্ধ দুজন হলেন উপজেলার বড়শৌলা গ্রামের জাকির হোসেন (৪৫) ও বাদুরা গ্রামের আলমগীর পঞ্চায়েত (৪০)। দুজনকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাতে মিরুখালী ইউপির আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুস সোবাহান শরীফের লোকজন নাঙ্গাভাঙ্গা গ্রামে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আবু হানিফ খানের সমর্থকদের মারধর করেন। খবর পেয়ে রাত ১০টার দিকে আবু হানিফ খানের একদল সমর্থক মোটরসাইকেলে নাঙ্গাভাঙ্গা গ্রামে যান। নাঙ্গাভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। রাত সাড়ে ১০টার দিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে গুলিবিনিময় হয়। এতে উপজেলার বড়শৌলা গ্রামের জাকির হোসেন ও বাদুরা গ্রামের আলমগীর পঞ্চায়েত গুলিবিদ্ধ হন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও সাতজন। রাতেই গুলিবিদ্ধ দুজনকে প্রথমে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দুজনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আহত নয়জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দুজন গুলিবিদ্ধ। জাকির হোসেনের ডান পায়ে ও আলমগীর পঞ্চায়েতের বাঁ পায়ের পাতায় গুলি লেগেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য দুজনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত বাকি সাতজনকে তাঁরা চিকিৎসা দিচ্ছেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু হানিফ খান বলেন, ‘শনিবার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজউদ্দিন মিরুখালী বাজারে এসে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে মিছিল–সমাবেশ করেন। এ সময় তিনি আমার লোকজনকে এলাকাছাড়া করতে বলে যান। সন্ধ্যার পর থেকে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর লোকজন নাঙ্গাভাঙ্গা গ্রামে ঢুকে আমার সমর্থকদের মারপিট করা শুরু করেন। খবর পেয়ে রাতে আমার লোকজন সেখানে গেলে ১৫ থেকে ২০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এ সময় গোলাগুলি ঘটনাও ঘটে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর বহিরাগত কিছু সন্ত্রাসী গুলি চালায়।’

আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুস সোবাহান শরীফ মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার লোকজনকে পুলিশের উপস্থিতিতে গুলি করা হয়েছে। স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর লোকজন এ ঘটনায় জড়িত।’

দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে দুজন গুলিবিদ্ধ ও কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে বলে জানান পিরোজপুরের পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।