মধুপুরে কলাবাগান কেটে ফেলার প্রতিবাদে সমাবেশ এলাকাবাসীর

টাঙ্গাইলের মধুপুরে বাসন্তী রেমার কলাবাগান কেটে ফেলার প্রতিবাদে বুধবার দোখলা এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজন করা হয়।
প্রথম আলো

টাঙ্গাইলের মধুপুরে বন বিভাগের কমকর্তা–কর্মচারীরা এক নারীর কলাবাগান কেটে ফেলেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। সমাবেশ থেকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর লোকজনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতারা এ সমাবেশে অংশ নেন। দাবি না মানা হলে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়ক অবরোধসহ আন্দোলন কর্মসূচি নেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।

বক্তারা বলেন, মধুপুর গড় এলাকার শোলাকুড়ি ইউনিয়নের পেগামারি গ্রামে বাসন্তী রেমা প্রায় ৫০ শতাংশ জমি বংশপরম্পরায় চাষাবাদ করে আসছেন। এ বছর তিনি ওই জমিতে কলাগাছের চারা লাগান।  বন বিভাগ ওই জমি তাদের দাবি করে সেখানে সামাজিক বনায়নের উদ্যোগ নেয়। গত সোমবার বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ওই জমিতে গিয়ে বাসন্তী রেমার লাগানো সবগুলো কলাগাছ কেটে ফেলেন। এ সময় বাসন্তী রেমা বাধা দিতে এলেও বনবিভাগের কর্মকর্তারা তা মানেননি। এ ঘটনার পর এলাকার লোকজন এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।

বাসন্তী রেমার কলাবাগান কেটে ফেলার ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার সকালে মধুপুর গড়ের আমলীতলা থেকে মিছিল শুরু হয়ে দোখলা বন বিভাগের রেঞ্জ অফিসের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়।

বাসন্তী রেমার কলাবাগান কেটে ফেলার ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার সকালে মধুপুর গড়ের আমলীতলা থেকে মিছিল শুরু হয়ে দোখলা বন বিভাগের রেঞ্জ অফিসের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। রিচার্ড সিমসাংয়ের সভাপতিত্বে দোখলা এলাকায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন জয়নশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সাবেক সভাপতি অজয় মৃ, মধুপুর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জষ্টিনা নকরেক, বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠনের সভাপতি জন যেত্রা, মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইয়াকুব আলী, শোলাকুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন প্রমুখ।

প্রবীণ নেতা অজয় মৃ বলেন, ‘১৯৬২ সাল থেকে এই দোখলাতে আমরা ভূমির অধিকারের দাবিতে সংগ্রাম করে আসছি। কিন্তু আমাদের দাবি আজও পূরণ হলো না। বনের ভেতর শত শত একর জায়গা দখল করে বহিরাগতরা এসে বসবাস করছে, বাণিজ্যিকভাবে চাষবাস করছে। তাদের গাছ না কেটে, তাদের কাছ থেকে জমি উদ্ধারের উদ্যোগ না নিয়ে বন বিভাগ কেন আমাদের জমির ফসল কেটে দখল নিতে চায়, তা আমাদের বোধগম্য নয়।’

টাঙ্গাইল বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) জামাল তালুকদার দাবি করেন, ওই জমি বন বিভাগের মালিকানাধীন। সামাজিক বনায়ন করার জন্য সেখানে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে।