মন্ত্রীর সংবর্ধনাকে ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়নি

পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের দুই মনোনয়নপ্রত্যাশীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা শহরে
ছবি: প্রথম আলো

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে সংবর্ধনা দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আজ শনিবার দুপুর পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। পুনরায় সংঘর্ষ এড়াতে শহরের বিভিন্ন মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এক বছর পর গতকাল শুক্রবার নিজের নির্বাচনী এলাকা কসবায় আসেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এ জন্য কসবা পৌরসভার মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী বর্তমান মেয়র এমরান উদ্দিন ও তাঁর সমর্থকেরা আইনমন্ত্রীকে সংবর্ধনা জানাতে উপজেলা পরিষদের সামনে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও মেয়র পদে আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী এম এ আজিজ ও তাঁর সমর্থকেরা মোটরসাইকেলবহর নিয়ে উপজেলা পরিষদের যাচ্ছিলেন। এ সময় দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। শুরু হয় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া আর ইটপাটকেল নিক্ষেপ। ভাঙচুর করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে কমপক্ষে ১০টি মোটরসাইকেল। এ সময় মন্ত্রী আনিসুল হক কসবা উপজেলা পরিষদে প্রবেশ করছিলেন। মন্ত্রী উপজেলা পরিষদে থাকার পরও দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ চলতে থাকে। ভাঙচুর করে ব্যাংক ও বিমার কার্যালয়ের গ্লাস।

পরে মন্ত্রী উপজেলা পরিষদের অনুষ্ঠানে কোনো বক্তব্য দেননি। তিনি শুধু বলেছেন, আওয়ামী লীগকে যদি কেউ দ্বিধাবিভক্ত করতে চায়, তাহলে তাদের দল থেকে বের করে দেওয়া হবে। তিনি বলেছেন, যাঁরা সংঘর্ষে জড়িয়েছেন, তাঁদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে সব কমিটি ভেঙে দেওয়া হবে।

পুনরায় সংঘর্ষ এড়াতে কসবা শহরের প্রতিটি মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা রয়েছে। আজ শনিবার সকালে কসবা সদরের সুপার মার্কেটের সামনে
ছবি: প্রথম আলো

ওই সংঘর্ষের জের ধরে গতকাল সন্ধ্যায় কসবা পৌর শহরের শাহপুর এলাকায় আবারও দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় কসবা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. জসিম উদ্দিনের কার্যালয়টি ভাঙচুর করেছে। রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

আজ সকাল থেকে কসবা পৌর শহরের পুরোনো বাজার ও তাঁর আশপাশের এলাকায় মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কসবা বাজারে জনসমাগম অনেক কমে গেছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে অনেক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

হামলার জন্য দুই মনোনয়নপ্রত্যাশী একে অপরকে দায়ী করেছেন। তবে কেউ মামলা করেননি।
পৌর মেয়র এমরান উদ্দিন বলেন, ‘আমি কোনো মামলা করিনি। মন্ত্রী মহোদয় যে সিদ্ধান্ত নেবেন, আমি তা-ই মেনে নেব।’
উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এম এ আজিজ বলেন, ‘মামলার প্রস্তুতি আছে। যদি মেয়রের লোকজন মামলা করে তাহলে আমিও মামলা করব।’

কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলমগীর ভুইয়া বলেন, মন্ত্রীর উপস্থিতিতে দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হলেও কোনো পক্ষই থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ না পাওয়ায় থানায় মামলা হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।