মন্ত্রীর স্বজনকে জরিমানা করে বরখাস্ত টিটিই কাজে বহাল, তদন্ত চলবে
রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলামের তিন স্বজনকে জরিমানা করে বরখাস্ত ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরিদর্শক (টিটিই) মো. শফিকুল ইসলামকে কাজে বহাল করা হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চলীয় পাকশী রেলওয়ে বিভাগের ব্যবস্থাপক শহীদুল ইসলাম আজ রোববার প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আজ দুপুর ১২টার দিকে শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে এই মুহূর্ত থেকে শফিকুলকে কাজে বহাল করলাম। গণমাধ্যমে যেসব বিষয় উঠে এসেছে, সেগুলোর তদন্ত চলবে। ১১ মে পর্যন্ত তদন্ত চলবে। যাঁরা দোষী সাব্যস্ত হবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, সরাসরি শফিকুল ইসলামকে বরখাস্ত না করে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হলে ভালো হতো। এ ক্ষেত্রে যে কর্মকর্তা তাঁকে বরখাস্ত করেছেন, সেই কর্মকর্তা যদি কারও দ্বারা প্ররোচিত হয়ে ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন; তাহলে তাঁর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
টিকিট ছাড়াই পাবনা থেকে ঢাকামুখী ট্রেনে উঠে এসি কামরায় বসে ছিলেন তিন যাত্রী। টিটিই মো. শফিকুল ইসলাম এলে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলামের আত্মীয় পরিচয় দিয়েছিলেন তাঁরা। তখন টিটিই বিনা টিকিটে ভ্রমণের জন্য তাঁদের কাছ থেকে জরিমানাসহ ভাড়া আদায় করেন। পাশাপাশি এসি কামরা ছাড়তে হয় তাঁদের। গত বৃহস্পতিবার রাতের এ ঘটনার পর ওই টিটিইকে মুঠোফোনে বরখাস্ত করার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। পরের দিন শুক্রবার তিনি আর কাজে যোগ দিতে পারেননি। টিটিই শফিকুল পশ্চিম রেলের সদর দপ্তর ঈশ্বরদীতে সংযুক্ত।
শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ করা ওই তিন যাত্রীর কাছে টিকিট দেখতে চাইলে তাঁরা রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেন। পরে তাঁদের এসি কামরা থেকে শোভন কামরার টিকিট দেওয়া হয়।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) নাসির উদ্দিন টিটিইকে বরখাস্তর কারণ হিসেবে এক যাত্রীর হাতে লেখা একটি অভিযোগের কথা জানিয়েছিলেন। ৫ মে ঘটনার দিন ইমরুল কায়েস নামের এক যাত্রী অভিযোগটি দিয়েছেন। টিটিই শফিকুল ইসলামকে ওই দিনই বরখাস্ত করা হয়।
অভিযোগে ওই যাত্রী দাবি করেন, তিনি ৫ মে দিবাগত রাত ২টা ১৫ মিনিটে কাউন্টারে টিকিট না পেয়ে ট্রেনে ওঠেন। এরপর টিটিই এসে তাঁদের কাছে টিকিট চান। তিনি টিকিট পাননি বলে জানান। পরে টিকিট দিতে বললে টিটিই তিনজনের ভাড়া বাবদ ১ হাজার ৫০০ টাকা দাবি করেন। ৩০০ টাকার টিকিট ৫০০ কেন জানতে চাইলে তিনি ৩ হাজার ৬০০ টাকা দিয়ে টিকিট নিতে হবে বলে জানান। এত টাকা দেওয়া সম্ভব না বলাতে টিটিই খেপে যান। তিনি বকাবকি করেন। ওই যাত্রীর দাবি, টিটিই মাদকাসক্ত ছিলেন। তিনি তাঁর শাস্তি দাবি করেন।